আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে; বিদেশিদের সমর্থন আছে

চট্টগ্রাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ মনস্থির করে ফেলেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নেতৃত্বে বর্তমান ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার পক্ষে জনমত স্পষ্ট হয়ে গেছে। এখন কিভাবে শেখ হাসিনার পতন ঘটাব, সেই সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। বিদেশিদের সমর্থন আছে, দেশেও সমর্থন আছে। কিন্তু ফয়সালা হবে রাজপথে। ফয়সালা হতে হবে রাস্তায়। সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে চট্টগ্রাম সিটির কাজির দেউড়িস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির ইফতার মাহফিলে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার রাজিব রন্জন।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘সম্প্রতি দুইটি সার্ভে রিপোর্ট পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। একটি সার্ভে হয়েছে, বিএনপির তারেক রহমান আগামী নির্বাচনের পর যে জাতীয় সরকারের কথা বলেছেন, সেটার পক্ষে কারা আর বিপক্ষে কারা। একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক চ্যানেল এ সার্ভে করেছে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এতে অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই সঠিক।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি সার্ভে করেছে ইকোনমিস্ট পত্রিকা। সারা বিশ্বে এ পত্রিকা খুবই জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। আমরা যে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলছি, সেটার পক্ষে কারা আছে সেটা নিয়ে সার্ভে হয়েছে। ৮০-৯০ শতাংশ মানুষ বলেছে, তারা নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের পক্ষে। সুতরাং জনমত বোঝার আর বাকি নেই। জনমত নিয়ে আর কোন প্রশ্ন নেই। জনমত গঠিত হয়ে গেছে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হতে হবে, আগামী বছর যেন আমরা ক্ষমতায় এসে ইফতার করতে পারি। এ মুহুর্তে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। আর আওয়ামী লীগ কোন পথে পালাবে, সেই পথ খুঁজে পাবে না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকার গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এ দেশকে তারা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। সরকার যেখানে হাত দিচ্ছে, সেখানে লুটপাট হচ্ছে। আগামীতে যদি দেশের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে জনগন দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভোট ডাকাত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খালেদা জিয়া মুক্ত হলে, মুক্ত হবে বাংলাদেশ। তাই আসুন আগামীর তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগনকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত করি।’

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। এ সরকারের অধীনে এখন সবকিছু ঊর্ধ্বগতি, নিয়ন্ত্রণহীন। খালেদা জিয়া লালদীঘির ময়দানে বলেছিলেন, দেশ বাচাও, মানুষ বাচাও। ঠিক তেমনিভাবে সুদূর লন্ডন থেকে তারেক রহমানের একই ডাক ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে।’

চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘সরকার দেশের সব গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনে পরিণত করেছে। তাই এ রাষ্ট্রের সংস্কার প্রয়োজন। রাষ্ট্র ও সাংবিধানিক সংস্কার করার জন্য জাতীয় ঐক্যমতের মাধ্যমে জাতীয় সরকারের রূপরেখা দিয়েছেন তারেক রহমান।’

মাহফিলে বক্তৃতা করেন সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশিদ, সদস্য মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

সিএন/এমএ