নিজস্ব প্রতিবেদক: নিউইয়র্কে বসবাসরত চট্টগ্রামের লোকজনের সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই জিয়ার বিরুদ্ধে আনা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। একই সাথে জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ চেয়েছে পরিবারের সদস্যরা। অন্যথায় অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।
শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায় নবান্ন পার্টি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মরহুম আব্দুল হাই জিয়ার স্ত্রী শাহিদা শিকদার হাই। এসময় আরও বক্তব্য দেন তাঁর ছেলে জিয়ার ছেলে ইশরাক বিন হাই ও মেয়ে মুন জাবিন হাই।
লিখিত বক্তব্যে শাহিদা শিকদার হাই বলেন, আব্দুল হাই জিয়ার ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দাওয়াত করার জন্য আমার মেয়ে ‘মুন হাই’ একটি দাওয়াত কার্ড তৈরি করে। যেখানে লেখা ছিল ‘Dua manful for Abdul Hai Zia. এই দাওয়াত কার্ড আমি ব্যক্তিগতভাবে জিয়ার কমিটির সেক্রেটারি আসরাফ আলি খান লিটন, ট্রেজারার মতিউর রহমানসহ অনেকের কাছে পাঠিয়েছি। ওরা দুজনেই ফেসবুকে কার্ডটি পোস্ট করেন। মতিউর রহমানের পোষ্টের প্রথম কমেন্ট মো. হানিফ কমেন্ট করেন This guy stolen about 200.00 thousand dollars from Chittagong association. But we don’t know where is the money is?
শাহিদা শিকদার বলেন, হানিফ সাহেব আমার স্বামী মরহুম আব্দুল হাই জিয়ার বিরুদ্ধে ফেসবুকে যে কমেন্ট করেছেন তা মিথ্যা অপপ্রচার ও সম্পুর্ন বানোয়োট। এই কমেন্ট দেখেই অনেকেই আমাকে এবং আমার ছেলেদের ফোন দিচ্ছিল। আমি কোরান খতম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বিধায় এই কমেন্ট আমার চোখে পড়েনি। কমেন্টটা পড়ে আমি এবং আমার ছেলে মেয়েসহ সবাই অত্যন্ত মর্মাহত
হয়েছি। দোয়া মাহফিলের পোষ্টের উপরে এ কেমন কমেন্ট? আমরা সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। আমার মেয়ে মুন ভীষনভাবে ভেঙে পড়েছে এবং মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। যেখানে আমার ঘরে এমনিই শোকের জোয়ার বইয়ে যাচ্ছে। যেখানে আমি আমার স্বামী এবং ছেলে-মেয়ে তাদের বাবা হারানোর শোকে ব্যথিত, সেখানে হানিফ সাহেবের এমন মিথ্যা কমেন্ট।
তিনি বলেন, আমরা যারা মুসলমান ধর্ম বিশ্বাস করি, জানাযার সময় আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার উদ্দেশ্যে বলা হয় যে, মৃত ব্যক্তির কাছে যদি টাকা পয়সা লেনদেন থাকে তাহলে পরিবারের পক্ষ থেকে দিয়ে দিবে। আমার ছেলেরা জানাযার সময় মেসেজটা উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে দিয়েছিল। তখন টাকা পাবে সেই রকম কোনো প্রস্তাব উত্থাপিত হয় নাই। কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হানিফ সাহেব কেন, কি স্বার্থে এবং কার স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ওনি আমার স্বামীর মৃত্যুর দুই বছরের পর এই কথা গুলো বলছেন আবার
কমেন্টটা মুছেও ফেলেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, ওনি যদি প্রমান করতে পারেন আমার স্বামী টাকা আত্মসাত করেছে, আমি সেই টাকা দিতে বাধ্য থাকবো। আর যদি প্রমান করতে না পারেন তাহলে আপনাদের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা
চাইবেন। এটাই আমাদের দাবী। আর যদি হানিফ সাহেব সেটা থেকে বিচ্যুত থাকেন তাহলে এইটা আইনের দেশ। আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল, আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।
শাহিদা শিকদার আরও বলেন, আব্দুল হাই জিয়ার যখন সমিতিতে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন ওর কমিটিতে কিছু টাকা জমা ছিল। আবার যখন সমিতিতে ইলেকশন হওয়ার সময় আসলো ঠিক তখনই বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ কোভিড হানা দিল। ইলেকশনের প্ল্যান আর সমিতি করতে পারে নাই। এরপর থেকেই সমিতির টাকাটা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য জিয়াকে বিভিন্ন ভাবে মেন্টাল প্রেসার দেওয়া হয়েছিল। জিয়ার কথা ছিল- আমার কাছে যেই টাকা আছে, এই টাকা আমার নয়, সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর। যারাই চাইবে তাদেরকে আমি এই টাকা বুঝিয়ে দিতে পারি না। ইলেকশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে যেই কমিটি আসবে আমি তাদেরকেই সব বুঝিয়ে দিব। তবে সেই সুযোগ জিয়া পান নাই।
আরেক অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আরেকটা কথা সব সময় কানে আসতো যে জিয়া নাকি আমার নামে সমিতির টাকা ট্রান্সফার করেছে। চ্যালেঞ্জ! এটা প্রমান করতে পারলে তিন ডাবল টাকা ফেরত দিব। যদি করতে না পারেন তাহলে সম্মানিত
সংবাদিক ভাইয়েরা আপনারাই বলেন আমার কি করা উচিত? এটা কেমন ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার হতে পারে। আমি কি আইনের সাহায্য নিতে পারি? কেন না আমি বতর্মান বাংলাদেশ লীগ অফ আমেরিকার সভাপতি। এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি পুরো বাংলাদেশকে প্রেজেন্ট করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি সিপিএ সরোয়ার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম এ জাফর, বেদারুল ইসলাম বাবলা, খোকন কে চৌধুরী, এম উদ্দিন ফোরকান, শাহাব উদ্দিন চৌধুরী লিটন, মোহাম্মদ নাজের উদ্দিন, মতিউর চৌধুরী, মো. সফিউল আলম শিকদার, মো. আশরাফ আলী খান লিটন, মো. আবুল কাশেম, বদিউল আলম, মো. শাহিনুর আলী, সৈয়দ শাকিল হক, হাফিজা হোসেন, নার্গিস রহমান, তুলি চৌধুরী, বিউটি ইয়াসমিন, মো. ইমানুল হক, মো. হাসানসহ চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
সিএন/এমটি
Views: 0
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন