ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: ইংরেজিকে যুক্তরাষ্ট্রের দাফতরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (১ মার্চ) এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে জারি করেন তিনি। খবর এপির।
এই আদেশের মধ্য দিয়ে ১৯৯০-এর দশকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমলে প্রদত্ত একটি আদেশ রদ করা হয়েছে। আগের আদেশে সরকারি তহবিল পায় এমন সব সংস্থাকে নথি ও সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অন্য ভাষার মানুষদের ভাষা সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
নতুন আদেশে বলা হয়েছে, ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় কতটা সাহায্য দেওয়া হবে তা নির্ধারণের জন্য সংস্থাগুলো এখনও নমনীয় থাকবে।
আদেশের বক্তব্য মতে, এই আদেশের কোনো কিছুই কোনো সরকারি সংস্থার নথি ও পরিষেবাগুলোতে কোনো পরিবর্তনের নির্দেশ দিচ্ছে না।
ইংরেজিকে দাফতরিক ভাষা করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা কেবল যোগাযোগকে সুগম করবে না বরং অভিন্ন জাতীয় মূল্যবোধকেও শক্তিশালী করবে এবং আরও সুসংহত ও দক্ষ সমাজ তৈরি করবে।’
এতে আরও বলা হয়, সংস্থা প্রধানদের ‘তাদের নিজ নিজ সংস্থার লক্ষ্য পূরণ এবং মার্কিন জনগণকে দক্ষতার সাথে সরকারি পরিষেবা প্রদানের জন্য কী প্রয়োজন তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’
যদিও হোয়াইট হাউস স্বীকার করেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫০টিরও বেশি ভাষায় কথা বলা হয়। তবে আদেশে বলা হয়েছে, ইংরেজি ‘আমাদের প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই’ জাতির ভাষা, এবং ‘আমাদের জাতির ঐতিহাসিক পরিচালনা দলিল।’ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সংবিধান অন্তর্ভুক্ত সবই ইংরেজিতে লেখা হয়েছে।’
ইউএস ইংলিশ নামক এক সংগঠনের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টিরও বেশি রাজ্য ইতিমধ্যে ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছে। সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজি প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষই ইংরেজিতে কথা বলে। তবে অন্য ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যাও কম নয়। ২০১৯ সালের মার্কিন সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ বাড়িতে ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলে।
কংগ্রেসের আইনপ্রণেতারা কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিভিন্ন আইন প্রস্তাব এনেছেন, তবে সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। গত মাসে ট্রাম্পের অভিষেকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন প্রশাসন হোয়াইট হাউসের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে স্প্যানিশ ভাষার সংস্করণ সরিয়ে দেয়।
এই পরিবর্তনে হিস্পানিক অধিকার সংগঠনসহ অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেন। হোয়াইট হাউস তখন জানায়, তারা ওয়েবসাইটের স্প্যানিশ সংস্করণ পুনরায় চালু করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে শনিবার পর্যন্ত সেটি পুনরায় চালু করা হয়নি। এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কি না, তা জানতে চাইলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ওয়েবসাইটের স্প্যানিশ সংস্করণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন, যা ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেকের পর পুনরায় চালু করা হয়।
সিএন/আলী
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন