ওয়াশিংটন, যুক্তরাষ্ট্র: অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের মেজরিটি হুইপ ডিক ডারবিন।
হুইপ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ফ্লোর নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে কয়েক দশক ধরে হয়রানির শিকার হওয়া ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানান।
ডারবিন তার মন্তব্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দেয়া ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির বিকাশে ইউনূসের জীবনজুড়ে কাজের ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা করেন।
তিনি ইউনূসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের লক্ষ্যে তার প্রথম বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে তার মন্তব্য শুরু করেন।
ডিক ডারবিন বলেন, ‘আমি আজ তাকে (ইউনূস) আমার পূর্ণ সমর্থন দিতে যাচ্ছি। আমি তাকে বিশ্বাস করি। আমি ২০ বছর পূর্বেও করেছি এবং আজও করছি। আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকেও তাকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি ইউনুসকে চিনি। তিনি তার হৃদয়ে বাংলাদেশি জনগণের জন্য সর্বোত্তম কল্যাণ লালন করেন এবং এ চ্যালেঞ্জিং সময়ে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।’
গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান ও দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। তার ক্ষমতাচ্যুতির কয়েক দিন পর ইউনূস নয়া নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বের শপথ নেন।
ডারবিন আরো বলেন, ‘গেল মাসে আমার বিস্ময়ের কথা কল্পনা করুন… জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে হাসিনা অবশেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং যে ছাত্ররা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা দাবি করে যে তাদের দেশের নেতা হবেন কেবলমাত্র মুহাম্মদ ইউনূস, সেই একই অর্থনীতির অধ্যাপক; যার সঙ্গে ২০ বছরেরও বেশি পূর্বে আমার দেখা হয়েছিল।’
’আমি তার সৌভাগ্যের কথা শুনে তাকে (ইউনূস) ফোন করি। তিনি উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, দেশের মানুষ এখন এ ঐতিহাসিক সুযোগে কাজে লাগাতে প্রস্তুত।’
ডারবিন গেল জুলাই মাসে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানির নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশে তিন সহকর্মীর নেতৃত্ব দেন। এতে তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ইউনূসের সাথে দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে ও তার বিরুদ্ধে আনা সন্দেহজনক অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।
ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানিয়ে ডারবিন ও তার সহকর্মীদের চিঠি পাঠানোর পর এ বিবৃতি দেয়া হয়।
এ গ্রীষ্মের শুরুতেও ডারবিন সিনেট ফ্লোরে একটি বক্তৃতায় ইউনূসের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ১০০ জনেরও বেশি নোবেল পুরস্কার জয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক প্রচারণার নিন্দা জানিয়েছেন।
ডারবিন ২০১০ সালে পৃথিবীজুড়ে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনূসকে কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে একটি প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেন। পরে ২০১৩ সালে ইউনূসকে এ পদক দেয়া হয়।
সিএন/আলী
Views: 0
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন