শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

এবার ইউক্রেন যুদ্ধ বলতে গিয়ে ইরাক যুদ্ধ বলে ফেললেন বাইডেন

বৃহস্পতিবার, জুন ২৯, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

শিকাগো, ইলিনয়, যুক্তরাষ্ট্র: ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে ইরাক যুদ্ধের কথা উচ্চারণ করে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়া ‘ইরাক যুদ্ধে’ হেরে যাচ্ছে। আর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিশ্বজুড়ে অচ্ছুত ও নিগৃহীত ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।’ বুধবার (২৮ জুন) রাশিয়ায় ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের সাম্প্রতিক সশস্ত্র বিদ্রোহ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ইরাক ও ইউক্রেন গুলিয়ে ফেলেন বাইডেন।

এ দিন, ইলিনয় রাজ্যের শিকাগো শহরে একটি সভায় বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল বাইডেনের। সেই সভায় যোগ দিতে হোয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে হেলিকপ্টারের দিকে রওনা হন। পথেই সাংবাদিকদের মুখে পড়েন তিনি।

প্রশ্ন করা হয়, ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর সাম্প্রতিক বিদ্রোহে পুতিন দুর্বল হয়ে পড়েছেন কিনা। উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘এটা বলা কঠিন। তবে, তিনি স্পষ্টতই ‘ইরাক’ যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন ও তিনি বিশ্বজুড়ে অচ্ছুত ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। অন্য দিকে, ৪০টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগ দিয়েছে।’

এ যুদ্ধের শুরু থেকেই সব রকমের সহযোগিতা নিয়ে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো। এ বিষয়টার প্রতি ইঙ্গিত করে বাইডেন বলেন,  ‘শুধু ন্যাটোই নয়, শুধুমাত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নই নয়, জাপানসহ বিশ্বের ৪০টি দেশ আমাদের সাথে যোগ দিয়েছে।’

ইরাক ও ইউক্রেনকে গুলিয়ে ফেলার মুহূর্তটি ধরা পড়েছে একটি ভিডিওতে; এরই মধ্যে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধী রিপাবলিকান শিবিরের অনেক রাজনীতিকই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ হাসি-ঠাট্টাও শুরু হয়।

এরই মধ্যে হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বিষয়টি হালকা করার চেষ্টা করে। এতে বলা হয়, ‘রাতে শ্বাস নিতে সাহায্য করার জন্য প্রেসিডেন্টের একটি সিপিএপি মেশিন ব্যবহারের কারণে এমনটা ঘটেছে।’

এ দিকে, বাইডেনের এমন হাস্যকর মন্তব্য নিয়ে মজা করতে ছাড়েননি রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। তিনি বলেছেন, ‘বাইডেন কি সত্যিই ইরাক বোঝাতে চেয়েছিলেন? নাকি ভিয়েতনামকে বোঝাতে চেয়েছিলেন?’

এর আগে ইরাক ও ইউক্রেনকে গুলিয়ে ফেলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর তিন মাসের মাথায় টেক্সাসের ডালাসে নিজের প্রতিষ্ঠিত জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রেসিডেন্সিয়াল সেন্টারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পুতিন তার দেশে জবাবদিহির অনুপস্থিতির কারণে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ইরাকে অন্যায্য ও নৃশংস হামলা চালিয়েছেন।’

তিনি আসলে বলতে চেয়েছিলেন, রাশিয়ার পুতিন অন্যায়ভাবে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছেন। কিন্তু, মুখ ফসকে ইউক্রেনের জায়গায় ‘ইরাক’ বেরিয়ে যায়। তবে, কথাটা মুখ থেকে বেরিয়ে যাওয়া মাত্রই তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারেন ও তৎক্ষণাৎ শুধরে নিয়ে বলেন, ‘আমি আসলে ইউক্রেনের কথা বলছি’। কথাটা বলেই তিনি কিছুটা বিড়বিড় করে বলেছেন, ‘এক অর্থে অবশ্য ইরাকেও (এমনটা হয়েছিল)।’

ইরাকের হাতে জীবাণু অস্ত্র ও গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র রযেছে – এ অজুহাতে ২০০৩ সালে দেশটিতে আগ্রাসনের নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। এ আগ্রাসন যে পুরোটাই মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে চালানো হয়েছিল, তা স্বীকার করতে শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও।

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন