রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

চার বন্ধুর বুদ্ধিমত্তায় ধরা পড়লো শাটলের চোর

বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

চবি প্রতিনিধি: বুধবার বিকেল ৩ টা ৫০ মিনিট। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) থেকে শহরগামী চারটার শাটল ট্রেন সবেমাত্র প্লাটফর্মে ঢুকেছে। এরমধ্যেই জানালা দিয়ে সিটে ব্যাগ রাখেন ইতিহাস বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী নুসরাত জাহান নাহার। কয়েক সেকেন্ড পর শাটল ট্রেন থামলে সিটে গিয়ে নুসরাত দেখেন তাঁর ব্যাগ নেই৷ বন্ধু বান্ধব নিয়ে অনেক খোঁজাখুজির পরও তিনি আর ব্যাগটি পাননি। তখনই বন্ধু-বান্ধরা পরিকল্পনা করেন পরদিন চোরকে খুঁজে বের করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী একই সময় তাঁরা স্টেশন কড়া নজর রাখলে সন্দেহভাজন এক যুবককে দেখতে পান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে যুবক পালানোর চেষ্টা করলে দৌঁড়ে ধরে পুলিশে দেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনে এই ঘটনা ঘটে।

আটক চোরের নাম ইকবাল হোসেন (২৬)। সে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার মুগজীব ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আক্তার হোসেনের ছেলে।

অন্যদিকে নুসরাত জাহান নাহারের অপর তিন সহপাঠী হলেন মুহিবুল্লাহ মাসুদ, জয় দাশ ও রেশমা আক্তার।

নুসরাত জাহান নাহার চলমান নিউইয়র্ককে বলেন, শাটল ট্রেনে সাম্প্রতিক সময়ে চুরির ঘটনাগুলোর বিষয় আমি জানতাম না। বুধবার চারটার ট্রেন ক্যাম্পাস স্টেশনে থামার আগে আমি জানালা দিয়ে সিটে ব্যাগ রাখি। কয়েক সেকেন্ড পর শাটল উঠে দেখি আর ব্যাগ নেই৷ বন্ধু বান্ধবদের ডেকে অনেকক্ষণ খুঁজেও পাইনি। পরে আমরা চারজন সিদ্ধান্ত নিলাম আজকের (বৃহস্পতিবার) চারটার ট্রেনে আমরা চোরকে খুঁজবো। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চারটার শাটল স্টেশন আসলে আমরা আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকি। কিছুক্ষণ পর সন্দেহভাজন একজনকে দেখতে পাই। তার মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল এবং গায়ে একটা চাদর ছিল। তাকে আমরা যখন পরিচয় জিজ্ঞেস করলাম সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করলো। এক পর্যায়ে তার হাতে থাকা ব্যাগে কি আছে জানতে চাইলে সে ব্যাগ রেখে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। আমরা তাকে নীপবন স্কুল থেকে ধরে প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দেই৷

নুসরাত জানান, প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশ পাঠালে তাকে পুলিশ বক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার পকেটে থাকা আমার হেডফোন দেখে নিশ্চিত হই সে আমার ব্যাগও চুরি করেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষিদ্ধ পুকুর (গোল পুকুর) পাড় থেকে সে ব্যাগ এনে দেয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর গোলাম কুদ্দুস লাভলু বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী এক চোরকে ধরে আমাদের খবর দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে চুরির বিষয় স্বীকার করে। আমরা তার কাছে থাকা চুরির ব্যাগটি মালিক সমাজতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রীর কাছে হস্তান্তর করি৷ পরে তাঁর কথা মতো নিষিদ্ধ পুকুর (গোল পুকুর) পাড় থেকে বুধবার চুরি হওয়া ব্যাগটিও উদ্ধার করা হয়। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেলওয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছি৷ তাঁরা এসে চোরকে নিয়ে যাবে।

জানতে চাইলে ষোলশহর স্টেশন পুলিশ ফঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাটলে একটা চোর ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন সম্প্রতি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত দুই সপ্তাহে অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থীর ব্যাগ ও মোবাইল চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সিএন/এমটি

Views: 0

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন