রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

শিরোনাম

জেলে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়া যায়?

রবিবার, জুন ২, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নজিরবিহীনভাবে সাবেক বা বর্তমান প্রেসিডেন্টদের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪ দফা অভিযোগে নিউ ইয়র্কের আদালত বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে।

আসন্ন নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন রায় ঘোষণা হওয়ায় এবার প্রশ্ন উঠছে সাব্যস্ত হওয়ার পরও কি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন ট্রাম্প? চলমান নির্বাচনি প্রচারের জন্য আদালতের ঐতিহাসিক এই রায়ের অর্থ তাহলে কী হতে পারে?

প্রথমত, প্রশ্ন উঠেছে এবার নির্বাচনে কি লড়তে পারবেন ট্রাম্প? এর উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে এখনো লড়তে পারবেন ট্রাম্প। মার্কিন সংবিধানে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য হতে যে তিনটি শর্ত রয়েছে এর মধ্যে দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর বিষয়ে কিছু বলা নেই।

শর্তগুলো হলো: প্রথমত, প্রার্থীদের অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছরের বেশি হতে হবে এবং তৃতীয়ত, প্রার্থীকে কমপক্ষে ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে।

প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের জন্য যেসব আইনি নিয়মকানুন তা ১৭৮৯ সালের পর আর পরিবর্তন হয়নি। ওই বছর জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রফেসর ইওয়ান মর্গান বিবিসিকে বলেন, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের হোয়াইট হাউসের জন্য লড়াইয়ের বিষয়ে কোনো নিয়ম-কানুন বলা নেই।

প্রফেসর মর্গান মনে করেন এর কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের যাত্রা শুরুর ইতিহাস।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এবং সে কারণে এমন সম্ভাবনা ছিল যে রাজতন্ত্র বিরোধী তৎপরতায় জড়িয়ে কেউ হয়তো জেল খাটতে পারেন— তখনও যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ কলোনি- ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তিনি অযোগ্য হয়ে পড়তে পারেন।

দেশটির প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের- যারা ১৭৮৭ সালে সংবিধান প্রণয়ন করেছেন – তারা মূলত ব্রিটিশদের দ্বারা বন্দি ছিলেন। বিপ্লব সফল না হলে তারা হয়তো রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হতেন এবং অপরাধী সাব্যস্ত হতেন।

এ কারণেই সংবিধান প্রণেতারা এ বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করতে চাননি, যে নীতির সুযোগে এ পর্যন্ত তিনজন জেলে থেকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন।

এলএ টাইমসকে প্রগতিশীল কনস্টিটিউশনাল একাউন্টিবিলিটি সেন্টারের সভাপতি এলিজাবেথ ওয়াইড্রা বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময় কারাগারে থাকলেও প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এবং নির্বাচিত হতে কোনো কিছুই তাকে বাধা দিতে পারবে না।’

তবে ফোজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে এক বছর বা তারও বেশি সময় সাজাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

অন্যদিকে মার্কিন জরিপবিদ ডগ শোয়েন বলেন, আট বছর আগের ঘটনায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। নির্বাচন হবে আগামী নভেম্বরে। ততদিনে মার্কিন ভোটারদের মধ্যে বিষয়টির প্রভাব অতটা জোরালোভাবে নাও থাকতে পারে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন