মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

দেশে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি

শনিবার, আগস্ট ৬, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে দেশে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে ডিজেল, পেট্রল, কেরোসিন, ও অকটেনের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। রাত ১২টার পর থেকে নতুন এই দর কার্যকর হবে।

নতুন দামে প্রতি লিটার ডিজেলে, কেরোসিনে ৩৪, অকটেনে ৪৬, পেট্রলে ৪৪ টাকা দাম বেড়েছে। ফলে এখন থেকে প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও প্রতি লিটার পেট্রল ১৩০ টাকায় কিনতে হবে।

যা আগে প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রল ৮৬ টাকা করে ভোক্তারা ক্রয় করতেন।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ প্রেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল) পরিশোধিত এবং আমদানি করা ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা করে সরকার। তবে অকটেন ও পেট্রোলের দাম অপরিবর্তিত ছিল।

দীর্ঘদিন ধরে করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের ক্রম ঊর্ধ্বগতির মধ্যে কিছুদিন ধরে দেশের বাজারেও বাড়ার আলোচনা শোনা যাচ্ছিল। সরকার এরই মধ্যে জ্বালানি তেল সাশ্রয়ে নানা নির্দেশনাও দিয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে উদ্ধৃত করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির চিন্তা করেনি। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা এডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।

জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত গত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ১০৬ দশমিক ০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে, যা এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪ দশমিক ০৯ টাকা এবং ১৩০দশমিক ৪২ টাকা (১ রুপি= গড় ১ দশমিক ২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪ দশমিক ০৯ এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রি করে (সকল পণ্য) ৮০১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।

আইআই/সিএন

Views: 0

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন