শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

নিউইয়র্কে স্বদেশি বৃহত্তম মেলায় বিশেষ সম্মাননা পেল প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা

মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদন: কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে সম্মাননা জানিয়েছে ব্রুকলিন মেলা কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১৯ মে) নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় মেলা হিসেবে পরিচিত ব্রুকলিন মেলায় এই সম্মাননা গ্রহণ করেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল হক।

বাংলাদেশি আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি অব ইউএসএ ইনক (বাফস) ও ৬৬ প্রিসেন্ট কমিউনিটি কাউন্সিল আয়োজিত জনাকীর্ণ ব্রুকলিন মেলায় প্রথম আলোর জন্য সম্মাননা স্মারক তুলে দিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কর্তৃপক্ষের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ডেপুটি চিফ রিচার্ড টেইলর। এসময় নিউইয়র্ক সিটির অফিসিয়েল, আয়োজক ও জনসমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করে মনজুরুল হক তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রথম আলোকে সম্মাননা ও স্বীকৃতি জানিয়ে মেলার আয়োজকরা নিজেরাই সম্মানিত হলেন। সংবাদপত্র বা সাংবাদিকেরা কোনো সম্মাননা প্রাপ্তির জন্য নয়, সবসময় নিজেদের দায় থেকে কাজ করে। প্রাপ্ত সম্মাননা প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাথে জড়িত সকলের উল্লেখ করে তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

২০২০ সালের শুরুতে নিউইয়র্কে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হলে নগরের হাসপাতালগুলোতে লাশের স্তূপ পড়েছিল। কারফিউ চালু হওয়ার পর নিউইয়র্কের মতো বিশ্বের কোলাহলময় নগর ভুতুড়ে নগরে পরিণত হয়। সাইরেন আর অ্যাম্বুলেন্সের ভীতিকর শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছিল পুরো নিউইয়র্ক শহর। এমন বাস্তবতায় অধিকাংশ বাংলা সংবাদপত্র তাদের ছাপা প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। কঠিন এমন বাস্তবতায় বিশেষ উদ্যোগে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা তাদের অনলাইন নিয়মিত আপডেটের পাশাপাশি ছাপা পত্রিকা প্রকাশনা ও বিতরণ অব্যাহত রেখেছিল। প্রথম আলোর প্রায় ৪০ জন কর্মি নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র যুদ্ধকালীন সাংবাদিকতার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করেছেন।

ম্যানহাটনের মতো মৃত্যুপুরী এলাকায় প্রথম আলোর ফটোগ্রাফার নিয়মিত ছবি ধারণ করতে পেরেছেন। প্রলয়কালের এসব ছবি এবং সংবাদ বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাংলা পোর্টালে নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছিল। পাশাপাশি নিউইয়র্কের জনসমাজের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সাপ্তাহিক বুলেটিন ছাপা সংস্করণে প্রকাশিত হচ্ছিল। বাংলাদেশি বহু প্রবাসী এখনও অনলাইনে শতভাগ অভ্যস্ত হয়ে উঠেননি। করোনা মহামারিকালে মসজিদে, মন্দিরে এবং বাংলাদেশি গ্রোসারিগুলোতে ছাপা প্রথম আলো নিয়মিত পৌঁছানো হয়েছে কোন বিরতি ছাড়াই।

সংবাদ ছাড়াও ঘরে থাকা বয়স্কজন ছাপা পত্রিকায় করোনাকালের বিভিন্ন ফিচার, স্বাস্থ্য বার্তা, সাহিত্য, সরকারি সুযোগ সুবধার কথা জানতে পেরেছেন তাদের আস্থার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর মাধ্যমে।

প্রথম আলোকে সম্মাননা জানিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মহামারি পরবর্তী স্বাভাবিকত্ব ফিরে পাওয়ার ধাপেও জনসমাজে বন্ধুর মতো প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা তথ্য দিয়ে, উদ্দীপনা দিয়ে পাশে থেকেছে। যারা মহামারির সময় নিজেদের জীবন বিপন্ন করে কাজ করেছেন তাদের চিহ্নিত করেছে প্রথম আলো। ঢালাও ‘সম্মাননা’ না জানিয়ে যারা মহামারির সময় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন, তাদের কর্ম ও আত্মত্যাগের সাহাসী উদ্যোগকে সামনে তুলে ধরেছিল প্রথম আলো।

আরও বলা হয়, যেকোনো বিবেচনায় মহামারির সময়ে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট লেখক সাংবাদিকরা সময়ের সেরা কাজ করেছেন। তাদের এসব কর্ম গ্রন্থিত হয়েছে ‘মহামারি করোনা: ডেটলাইন নিউইয়র্ক’ গ্রন্থে।

এদিকে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে সম্মাননা জানানোর পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ব্রুকলিনে বসবাসরত বাংলাদেশি কামাল হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের কমিউনিটিতে যাকে তাকে ক্রেস্ট দেয়া একটা বাণিজ্যিক বিষয় বলে মনে করা হয়। মেলার আয়োজকরা প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে সম্মাননা প্রদান করায় তাদের বাহবা দিতে হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কুইনস থেকে মেলায় যোগ দিয়েছিলেন আফসানা খানম। সিলেট অঞ্চলের এ প্রবাসী তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সব ভালোর সাথে প্রথম আলো- এবার মেলা আয়োজকরাও ভালোকে চিহ্নিত করতে পরেছেন দেখছি !

জামাইকায় বসবাসরত এডভোকেট জয় আচার্য্যি বলেন, প্রবাসে যখন সবাই ‘আমি আমি, করেন- তখন পথম আলোকেই ‘আমরা’ বলতে দেখি। প্রবাসী এই আইনজীবী প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার ক্রমাগত সাফল্য কামনা করে মান সম্পন্ন সাংবাদিকতা নিয়ে ক্রমাগত জনসমাজের পাশে থাকার আহ্বান জানান।

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাকে বাংলাদেশিদের সর্ববৃহৎ মেলায় সম্মাননা জানানোয় উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পত্রিকাটির সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রথম আলোর উত্তর আমেরিকার কোন কাজই একক কারো কাজ বলে বিবেচিত হয় না। যৌথ সাফল্যের সমস্ত প্রয়াসে জড়িত থাকেন সব পর্যায়ের কর্মীরা, এমনকি যিনি পত্রিকাটি পৌঁছে দেন দোকানে দোকানে – তিনিও কম কিছু করেন না অন্যদের চেয়ে।

তিনি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাথে জড়িত সব লেখক, সাংবাদিকসহ সমস্ত কর্মীদের জন্য এ সম্মাননা অনুপ্রেরণার কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন। ইব্রাহীম চৌধুরী বলেছেন, শুধু প্রথম আলো সংশ্লিষ্ট লেখক সাংবাদিকরা নয়- মহামারির সময়ে বাংলা সংবাদমাধ্যমের অনেকেই সক্রিয় থেকে কাজ করেছেন। তাদের এ অনন্য ভূমিকা দূর দেশেও বাংলা সাংবাদিকতাকে সমৃদ্ধ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সিএন/এমটি

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন