আঙ্কারা, তুরস্ক: শীতল যুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় পূর্ব-পশ্চিম বন্দী বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচ ও বার্লিনে হত্যাকান্ডের জন্য কারাগারে বন্দী একজন রুশ গোয়েন্দা কর্নেলসহ দুই ডজন বন্দী বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) মুক্তি পেয়েছে। কয়েক মাসের গোপন আলোচনার পর একটি জটিল বহুজাতিক চুক্তির মাধ্যমে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন মেরিন পল হুইলানসহ অন্যদের মুক্তি দেয়া হয়। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বিমানবন্দর টারমাকে একটি নাটকীয় বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের মুক্তি দেয়া হয়।
উচ্ছ্বসিত পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন। বাইডেন বলেছেন, ‘তারা ওভাল অফিস থেকে তাদের মুক্তিপ্রাপ্ত প্রিয়জনকে ফোন করতে সক্ষম হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘তাদের নৃশংস অগ্নিপরীক্ষা শেষ হয়েছে।’
চুক্তির অধীনে রাশিয়ান বন্দীদের মুক্ত করতে সম্মত করার জন্য বাইডেন মিত্র দেশ জার্মানি,পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও নরওয়ের নেতাদেরকে এবং বন্দীদের হস্তান্তরের আয়োজনে সম্মত হওয়ার জন্য তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা ও রুশ ভিন্নমতাবলম্বী এবং মানবাধিকার কর্মীদের বিনিময়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং অন্যান্য অপরাধের জন্য আটক রাশিয়ানদের মুক্তি দেয়ার জন্য ‘তারা সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দুই শিশুসহ মোট দশজন রাশিয়ান এবং রাশিয়ায় বন্দী ১৬ জন পশ্চিমা এবং ভিন্নমতাবলম্বী রাশিয়ানদের মুক্তি দেয়া হয়েছে। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ফিরে আসা বন্দীদের মধ্যে ছিলেন একজন রাশিয়ান গোয়েন্দা এজেন্ট ভাদিম ক্রাসিকভ, যিনি জার্মানিতে একজন প্রাক্তন চেচেন বিদ্রোহী কমান্ডারকে নির্লজ্জভাবে খুনের জন্য বন্দী ছিলেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন, ‘কঠিন’ বন্দী বিনিময় ‘জীবন বাঁচিয়েছে’।’
টিভির চিত্রগুলোতে দেখা যায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ান বন্দীদের মস্কো বিমানবন্দরে একটি লাল গালিচা স্বাগত জানান, তারা তাদের বিমান থেকে নামার সময় তাদের আলিঙ্গন করেন। পুতিন বলেন, ‘মাতৃভূমিতে ফিরে আসার জন্য আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাতে চাই।’
বাইডেন ও সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট মনোনীত প্রার্থী, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, ওয়াশিংটনের বাইরে মুক্তিপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের বন্দীদেরকে দিন শেষে অভ্যর্থনা জানাবেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, ‘তারা ৩২ বছর বয়সী গার্শকোভিচের মুক্তিতে ‘স্বস্তি অনুভব’ করছে।’ গার্শকোভিচ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে রাশিয়ায় একটি রিপোর্টিং ট্রিপে আটক হয়েছিলেন এবং জুলাই মাসে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ১৬ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছিল ও যুক্তরাষ্ট্র এর নিন্দা জানিয়েছিল।
গার্শকোভিচের পরিবার বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা তাকে সবচেয়ে বড় আলিঙ্গন করার জন্য অপেক্ষা করতে পারি না ও তার মিষ্টি এবং সাহসী হাসি কাছে থেকে দেখতে পাই না।’
বাইডেন পরে একটি বিমানে হাস্যোজ্জ্বল গার্শকোভিচ ও অন্যান্য বন্দীদের একটি ছবি পোস্ট করেছেন।
সিএন/আলী
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন