পশ্চিম তীরে তুর্কি-আমেরিকানকে খুন করল ইসরাইলের বাহিনী

নাবলুস, ফিলিস্তিন: অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেইতা শহরে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) একজন তুর্কি-আমেরিকান মহিলাকে গুলি করে খুন করেছে ইসরাইলের বাহিনী। সেখানে গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছে দখলদার ইসরাইলের সেনাবাহিনী।

তুরস্ক এ নারীকে আয়েনুর ইজগি আইগি হিসাবে শনাক্ত করেছে এবং এ খুনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ হত্যাকান্ডকে একটি ‘দুঃখজনক’ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তার মিত্র ইসরাইলকে তদন্তের জন্য চাপ দিয়েছে।

জাতিসংঘের অধিকার অফিস বলেছে, ‘ইসরাইলের বাহিনী আয়েনুরকে ‘মাথায় গুলি’ করে খুন করেছে। এএফপির এক সাংবাদিক নাবলুসের একটি হাসপাতালের দিকে তাকে চিকিৎকরা নিয়ে যেতে দেখেছেন।’

জাতিসংঘ বলেছে, ‘২৬ বছর বয়সী আয়েনুর ইজগি আইগি বেইতাতে একটি ‘বসতি বিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে’ অংশ নিয়েছিলেন।’

প্রায় চার লক্ষ ৯০ হাজার মানুষের বসবাসের পশ্চিম তীরে ইসরাইলের বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্গন।

ডানপন্থী ইসরাইলের মন্ত্রীদের সমর্থনে ফিলিস্তিনিদের আবাসস্থল বেইতার ভূমিতে ইসরাইল নয়া ইভ্যাতার বসতি স্থাপন করেছে। এ বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছে। ইসরাইলের বাহিনী এ বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে বহু ফিলিস্তিনিকে খুন করেছে।

হাসপাতালের পরিচালক ফুয়াদ নাফা বলেন, ‘আইগি ‘মাথায় বন্দুকের গুলি নিয়ে’ নাবলুসের রাফিদিয়া হাসপাতালে পৌঁছান ও পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।’

তুরস্ক বলেছে, ‘তাকে ‘ইসরাইলের দখলদার সেনার’ খুন করেছে।’

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ইসরাইলের পদক্ষেপকে ‘বর্বর’ বলে নিন্দা করেছেন।

ইসরাইলের শীর্ষ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘তারা ইসরাইলের ‘সরকারের কাছে আরো তথ্য’ চেয়েছে।’

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে বলেন, ‘একজন আমেরিকান নাগরিকের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত।’

গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতার-আয়েনুর ইজগি আইগিকে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর খুনির ঘটনাকে ‘জঘন্য অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ ভয়ঙ্কর লঙ্ঘনের মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা দখলদার ইসরাইলের আরো নৃশংসতার জন্য একটি নয়া প্রণোদনা।’

ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি মুভমেন্টের (আইএসএম) সহ-প্রতিষ্ঠাতা নেইতা গোলান বলেছেন, ‘আয়েনুর ইজগি আইগি আইএসএমের সদস্য ছিলেন এবং ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে একটি সাপ্তাহিক বিক্ষোভের জন্য বেইতায় ছিলেন।’

সিএন/আলী