বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

শিরোনাম

বনানীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২

প্রিন্ট করুন

চলমান নিউইয়র্ক ডেস্ক : বনানীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। মায়ের কবরের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, গীতিকবির পুত্র সরফরাজ আনোয়ার উপল, কন্যা দিঠি আনোয়ার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়সহ পারিবার ও সংগীতাঙ্গনের ঘনিষ্ঠজনেরা।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে আজ সকাল ১০.৩০ থেকে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ রাখা হয়। সেখানে তার  প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয়। এ সময় শেষ বারের মত সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধায় সিক্ত হন গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ আবৃত্তি সংস্কৃতি পরিষদসহ দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে শেষ দেখা দেখতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছিলেন সংগীতশিল্পী, কুমার বিশ্বজিৎ, মনির খান, নকীব খান, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, আসিফ ইকবাল, শেখ সাদী খান, মানাম আহমেদ, ইমন সাহা প্রমুখ। এছাড়া নায়ক উজ্জ্বলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার বাদ জোহর বিএফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে ফুল দিয়ে বিভিন্ন সংগঠনরা শ্রদ্ধা জানান গুণী এই গীতিকারকে। সেখানে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। অসংখ্য কালজয়ী গানের এই স্রষ্টাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন,‘ তিনি বলেন, গাজী মাজহারুল আনোয়ার বাংলাদেশের কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার, পরিচালক ও প্রযোজক। অর্থাৎ তিনি একাধারে গান লিখতেন, সুর করতেন একইসঙ্গে চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছেন। তার হাত দিয়ে বহু কালজয়ী গান রচিত হয়েছে।

বিবিসির জরিপে বাংলার সেরা ২০টি গানের মধ্যে তার তিনটি গান স্থান পেয়েছে। এটি চাট্টিখানি কথা নয়। একইসাথে তিনি জয় বাংলা বাংলার জয় গানের রচয়িতা। তিনি আরও বেশ কয়েকটি গানের রচয়িতা যেগুলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা দিয়েছে, দেশের মুক্তিকামী মানুষদের প্রেরণা দিয়েছে। গাজী মাজহারুল আনোয়ার আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও তিনি তার কাজের মধ্যে শতবর্ষ বেঁচে থাকবেন।

এরপর দুপুর সোয়া ২টার দিকে চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হাজির হয়েছিলেন সংগীতব্যক্তিত্ব খুরশীদ আলম, ফোয়াদ নাসের বাবু, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার, সোহানুর রহমান সোহান, গীতিকার আসিফ ইকবাল, গীতিকার জুলফিকার রাসেল, সংগীতশিল্পী রবি চৌধুরী, শফিক তুহিনসহ সংগীত ও চলচ্চিত্রের আরও গুণী ব্যক্তিত্বরা।

চ্যানেল আই ভবন থেকে দুপুর ৩টার দিকে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহবাহী গাড়িটি গুলশানের আজাদ মসজিদের দিকে রওনা হয়। বাদ আছর সেখানে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার সকালে অসুস্থতাবোধ করলে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে গুলশানের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ২০ হাজারের বেশি গান লিখেছেন। বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় রয়েছে তার লেখা তিনটি গান। গীতিকার হিসেবে ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০০২ সালে একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

এফআইটি/সিএন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন