শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত

বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৭, ২০২৩

প্রিন্ট করুন

ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত- এমন মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্র ফের জানিয়ে দিল- দেশটি আলাদা করে কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নেবে না। সোমবার (২৪ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। সূত্র: ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এক কর্মীর কানাডায় আশ্রয় না পাওয়া ও অতীতে বিএনপির রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি।

ওই সাংবাদিক বলেন, ‘কানাডার ফেডারেল আদালত বিএনপির সাথে যুক্ত একজন কর্মীর আশ্রয় আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ও দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিএনপি অতীতে রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত হয়েছে, বিশেষ করে ২০১৪ সালে। সে সময় জাতীয় নির্বাচনের সময়ে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করেছিল। এবারো বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের এগিয়ে আসার সাথে সাথে বিএনপিকে সহিংসতা শুরু করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল। এ ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?’

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আমরা বাংলাদেশে বা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে অবস্থান নিই না। কিন্তু, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব দেশেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত।’

এর আগে একই ব্রিফিংয়ে অন্য এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, পুরো বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটছে; যেখানে হাজার হাজার মানুষ ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছেন। বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের মোবাইল ফোন তল্লাশি, গ্রেফতার ও হাজার হাজার মামলাসহ বিরোধীদের সমাবেশে ইন্টারনেট বন্ধের অভিযোগ আসছে। এমনকি মৃত বিরোধী নেতারাও বর্তমান সরকারের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তাহলে, যারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করছে, যুক্তরাষ্ট্র কি তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে?

ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘পররাষ্ট্ররমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গেল ২৪ মে ভিসা নীতি জারি করার সময় স্পষ্ট করে বলেছিলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে এ ভিসা বিধিনিষেধগুলো প্রযোজ্য হবে। গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে এমন কর্মকাণ্ডের মধ্যে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার ব্যবহার করে জনগণকে তাদের সংগঠনের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার থেকে বিরত রাখার মত কাজ রয়েছে। এছাড়া, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা মিডিয়াকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখার জন্য পরিকল্পিত যে কোন ব্যবস্থার ব্যবহার হলে সেটিও এ নীতির মধ্যে রয়েছে।’

এ পর্যায়ে ওই সাংবাদিক বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মীদের হুমকি, হয়রানি ও বিচারের শিকার হওয়ার বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি প্রশ্ন করেন, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮৬ শতাংশ মানবাধিকার কর্মী বিভিন্ন বাধা ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। অর্থ নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে আরেকটি অস্ত্র, কারণ তাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে। তাই, অনেক আন্তর্জাতিক সাহায্য গ্রহীতা সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা তাদের বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না বলে আমি শুনেছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি উদ্বেগজনক বলে মনে করেন?

উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এ মুখপাত্র বলেন, ‘সাধারণ নিয়ম হিসেবে, গণতান্ত্রিক সমাজে স্বাধীনভাবে সবাইকে তাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করার সক্ষমতাকে সমর্থন করা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মানবাধিকারের ওপর যে কোন ধরনের বিধিনিষেধের বিরোধিতা করি এবং এ বিষয়ে এর চেয়ে বলার মত আমার কাছে আর কোন নির্দিষ্ট মন্তব্য নেই।’

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন