শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

বুয়েটকে অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে

রবিবার, মার্চ ৩১, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, ‘বুয়েটের ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। বুয়েটকে জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে সরকার অ্যাকশনে যাবে।’

ওবায়দুল কাদের রোববার (৩১ মার্চ) সকালে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ভবনে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত সাংগঠনিক জেলাগুলোর নেতৃবৃন্দ, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সাংসদ এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনা তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে একটা অপরাজনীতি জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিণত করা হবে। এটা যাতে না হয়, আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। এরকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’

বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সব অপকর্ম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স। সেই নীতিতে আমরা এগিয়ে চলছি। বুয়েটে আবরার হত্যায় কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডে নেতাকর্মীদের দন্ড হয়েছে, কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুয়েটে সেদিন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না আর আমি রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারব না- এটা কোন ধরনের আইন? কোন ধরনের নিয়ম?’

সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অবাদ ও সুষ্ঠু করার ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে প্রশাসন কোন প্রকার হস্তক্ষেপ পারবে না। আমরা সাংসদ-মন্ত্রীরা যদি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত  থাকি, তাহলে বিনা প্রতীকে নির্বাচন করার যে উদ্দেশ্য নেত্রী করেছেন- তা স্বার্থক হবে।’

তিনি বলেন, ‘কেউ ক্ষমতার দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। যা নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে করবেন। সে স্বাধীনতা আছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, যদি কোন অনিয়ম মনে করে তারা ব্যবস্থা নেবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। কাজেই আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ভালভাবেই চলছে সবকিছু। এর মধ্যে দায়িত্বশীলদের এমন কিছু কথাবার্তা দলকে সংকটে ফেলে। ফ্রি স্টাইলে যা কিছু বলবেন- এটা তো আওয়ামী লীগ নয়। দলের গঠনতন্ত্র নিয়ম কানুন আছে। এগুলোর অ্যাকশন আমরা নিব। এরমধ্যেই কিছু অ্যাকশনও নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতারা বিভিন্নজন কেউ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলেন, আবার কেউ ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেন। সেই পাকিস্তানি আমল থেকে যে ভাষায় আইয়ুব খান কথা বলেছে, আজকে সেই ভাষায় কথা বলছে বিএনপি। তাদের সব ইস্যুই মার খেয়েছে ভোটে পরাজিত হয়ে। এখন তাদের ইস্যু ভারত বিরোধিতা। অ্যান্টি ইন্ডিয়া ফোভিয়া তৈরি করার ইস্যু খুঁজে নিয়েছে।’

রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়ে যায়, তখন বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। আর তারা এখন রিজার্ভ নিয়ে কটাক্ষ করে। যখন রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে, ঈদ উপলক্ষে সে রিজার্ভ  আরো বাড়বে- এটাই স্বাভাবিক। তারা না জেনে শুনেই মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে।’

বাজার দর নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিছু পণ্যের মূল্য কমেছে। বাজার উঠানামা করবেই। বিশ্ব সংকট এর জন্য দায়ী, আর শাস্তি পাচ্ছি আমরা। আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই এ সংকট অতিক্রম করার সাহস আমরা পাচ্ছি। ইনশাল্লাহ এ সংকট কেটে যাবে।’

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সম্মেলন করে সেখানে কমিটি গঠন করা হবে। আমরা সম্মেলন করে কমিটি করতে চাই। কেউ ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ ও দীপু মনি,  সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান ও উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

সিএন/আলী

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন