বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

শিরোনাম

ভাটিয়ারী লিংক রোড: পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্য!

শনিবার, মার্চ ৫, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ইফতেখার ইসলাম: বন্দর নগরী চট্টগ্রামকে ঘিরে আছে অসংখ্য পাহাড় আর সমুদ্র। পাহাড়ি বৃক্ষের সজীবতা আর সমুদ্রের বিশালতা যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। এমনি এক অপার সৌন্দর্যের স্থান নগরীর দক্ষিণে সিটি গেইট থেকে সাত কিলোমিটার দূরে ভাটিয়ারী লিংক রোড। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী স্থান থেকে পূর্বে চট্টগ্রামের হাটহাজারী রোডের সংযোগ রোড এটি। যার দু’পাশে ঘিরে আছে সবুজ বৃক্ষরাজি আর পাহাড়ের সৌন্দর্য। যা সকলের নজর কাড়ে।

প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরবর্তী এই সড়কের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে যেন স্বপ্নরা খেলা করে। তাইতো এই সড়কে পথ চললে পুলকে ভরে যায় মন। চলতে চলতে কিছুটা পথ আগালে সড়ককে দেখে মনে হবে যেন কোন এক গভীর সমুদ্রের ঢেউ। এর পাশে আছে সবুজের সরোবর। পাহাড়ি পথে পথে চোখে পড়ে হরেক রকমের দৃশ্য। আর এসব সহজেই আকৃষ্ট করে মানবমন।

রাস্তার শুরুতেই. চোখে পড়বে উঁচু-নিচু মসৃণ পথ। পাহাড়ের ভাঁজে জুম চাষ, সেনাবাহিনীর ট্রেনিং গ্রাউন্ড, পাহাড় জুড়ে বৃক্ষরাজীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য।রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত ‘সানসেট পয়েন্ট’, যার মাধ্যমে আপনি পাহাড়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন বঙ্গোপসাগরের সূর্যাস্ত।

ভাটিয়ারী পাহাড়ের মাঝে আছে অপূর্ব সুন্দর এক লেক। যার পরিচ্ছন্ন সবুজাভ পানি আপনাকে করবে বিমোহিত। চাইলে একটু বোট রাইডও করে নিতে পারেন, রয়েছে এরও সুব্যবস্থা। কিছু দূর এগোলেই টিলার বাকে দেখা মিলবে ‘ভাটিয়ারীগলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাব’ যা কিনা দেশের গলফ ক্লাব গুলোর মাঝে অন্যতম। ঘুরে দেখতে পারেন, তবে তা অবশ্যই অনুমতি সাপেক্ষে।

রাস্তা ধরে যেতে যেতে চোখে পড়বে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আদিবসতী গ্রাম, পাহাড়ি জুম ঘর।রাস্তার শেষ দিকে দেখে নিতে পারেন পাহাড়ি প্রকৃতিকে সুসংবদ্ধ করে তৈরি করা আধুনিক ইকোপার্ক ‘ক্যাফে ২৪’, এতে রয়েছে কৃত্রিম ঝর্ণা, পাহাড়ি লেক, বোট রাইডের ব্যবস্থা, সেনাবাহিনীর ট্রেনিং অ্যাকটিভিটি, ছাঁটাই করা ঘাসের মসৃণ সবুজ মাঠে বসার জন্য পাতা বেঞ্চ, ট্রেন রাইড সহ নানা কিছু।

এখানে যেমন সবুজের স্বর্গ উঁকি দিয়ে ডাকে ঠিক তেমনি সজীবতায় শীতল হয়ে যায় দেহ। মাঝে মাঝে কানে ভেসে আসে হরেক রকমের পাখ-পাখালির ডাক। সব মিলিয়ে এ যেন সৌন্দর্যের তীর্থস্থান।

আর প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত ছুটে আসেন সবুজপ্রেমিরা। কেউবা পরিবার নিয়ে, কেউবা ছুটে আসেন স্বজন নিয়ে। এক সাথে প্রকৃতি আর কৃত্রিমতা এই স্থানটিকে সকলের প্রিয় করে তুলেছে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা ফাহিম রহমান নামে এক পর্যটক বলেন, ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে এসেছি। এই সড়কের অনেক নাম ডাক শুনেছি । আজ পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখতে আসলাম। সত্যিই খুব মুগ্ধকর। বিকেলের সময়টা বেশ দারুণ কাটে এখানে। হালকা বাতাস তার সাথে পাতার শব্দ মিশে এক অন্যরকম সুর সৃষ্টি করে। যা খুব মনযোগ দিলেই আচ করা যায়।

এইদিকে ফেনী থেকে আসা রায়হান কবির নামে এক তরুণ বলেন, বন্ধুদের নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছি। এই স্থানে খুব ভালো ছবি আসে। পাহাড় থেকে নিচের ভিউটা চমৎকার।

প্রসঙ্গত, রাস্তা জুড়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলো সন্ধ্যা নাগাদ বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৮টা থেকে নিরাপত্তা জনিত কারণে এ রাস্তা দিয়ে জনসাধারণকে আর প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা সংরক্ষিত এ এলাকাটির রাস্তা ও তার দুই পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আসলেই নান্দনিক। অল্প দূরত্বের রাস্তাটিতে আসলে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, যা দেখে না বললেই নয়, ভাটিয়ারীর পাহাড়ে, বাহ কি সুন্দর…।

আইআই/সিএন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন