ওয়রগান উপত্যকা, মরক্কো: মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানায় মানুষ তাদের বিছানা থেকে রাস্তায় ছুটে এসেছে, আসছে এবং পাহাড়ি গ্রাম ও প্রাচীন শহরগুলোর ভবন ভেঙে পড়েছে। যেগুলো এ ধরনের শক্তিশালী ভূমিকম্প সহনীয় করে নির্মিত হয়নি। দুই হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন ও শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুর্গম এলাকায় উদ্ধারকর্মীদের পৌঁছাতে যুদ্ধ করতে হয়েছে। ফলে, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ছয় দশমিক আট মাত্রার এ ভূমিকম্পটি উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে ১২০ বছরের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। এতে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে আতঙ্ক ও অবিশ্বাসের মধ্যে মানুষদেরকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে হয়।
এদের মধ্যে একজন বলেন, ‘থালাবাসন ও দেয়ালের ঝুলন্ত জিনিসপত্র বৃষ্টির মত পড়তে শুরু করে ও মানুষরা তাদের পায়ে দাঁড়াতে পাড়ছিল না। ভূমিকম্পে পাথর দিয়ে তৈরি দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে ও পুরো সম্প্রদায় যেন ধ্বংসস্তূপে ঢেকে যায়!’
খরাপীড়িত ওয়রগান উপত্যকার মত প্রত্যন্ত গ্রামগুলো বিদ্যুৎ ও মুঠোফোন পরিষেবা বিকল হয়ে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ঐতিহাসিক মারাকেচে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে দেখা যায়, রাস্তায় গুচ্ছ গুচ্ছ মানুষ অবস্থান নিয়েছে, যারা ভঙ্গুর ও অনিশ্চিত ভবনগুলোয় ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত শহরের বিখ্যাত কুতুবিয়া মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তবে এর পরিমাণ কত তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি। এর ৬৯ মিটার (২২৬ ফুট) উঁচু মিনারটি ‘মারাকেচের ছাদ’ নামে পরিচিত। মরক্কোর নাগরিকরা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এ বিখ্যাত লাল দেয়ালের ক্ষতিগ্রস্ত কিছু অংশের ভিডিও পোস্ট করেছেন।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে কমপক্ষে দুই হাজার ১২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই মারাকেচ ও উপকেন্দ্রের নিকটবর্তী পাঁচটি প্রদেশে ছিলেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত দুই হাজার ৫৯ জন, যাদের মধ্যে এক হাজার ৪০৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সিএন/এমএ
Views: 0
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন