মিরসরাই প্রতিনিধি: মিরসরাই উপজেলা সদরের কোর্ট রোডে অবস্থিত একটি হোটেলের জমি দখলের জন্য রাজনৈতিক প্রভাব ও পেশীশক্তি প্রয়োগ করে হামলা-মামলার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার সদরের একটি রেস্টুরেন্টে আওয়ামী লীগ নেত্রী ছকিনা বেগমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এমনটি জানান ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে সেলিনা আক্তার জানান, আমার দাদা মরহুম আব্দুল আজিজ মিয়া থেকে ১৯৮৬ সালে আমার ভাই আবু রাশেদকে দানপত্রের মাধ্যমে ১৩ শতক সম্পত্তি দান করেন। যেখানে ১৯৮৭ সাল থেকে শরিফ হোটেল পরিচালনা করা হয়। এছাড়া হোটেলের পেছনে আমারা ৫ ভাই বোনের ১৮ শতক ওয়ারিশি সম্পত্তি রয়েছে। ২০২০ সালে রাতের আঁধারে দুষ্কৃতিকারীরা শরিফ হোটেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে পুড়ে যাওয়া হোটেলের পুনঃনিমার্ণ করতে গেলে আমার ফুফাত ভাই মাহফুজ আলম, আলমগীর, ফারুক, জসিম ও মাহফুজের ছেলে রেদোয়ান একটি জাল দলিল উপস্থাপন করে নির্মাণ কাজে বাধা দেন। পরবর্তীতে উক্ত জাল দলিলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে আমরা একটি মামলা দায়ের করি। যা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
আদালত উভয়পক্ষকে উক্ত সম্পত্তিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আওয়ামী লীগ নেত্রী ছকিনা বেগম ও তার স্বামী নজরুল ইসলাম হিজড়া সহ সন্ত্রাসী এনে ২০২০ সালে উক্ত জায়গা তার দাবী করে সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করে। আমারা বাধা দিলে আমাদের উপরও হামলা করে। এঘটনায় তখনা আমরা মিরসরাই থানায় মামলা করি। ছকিনা বেগম মিরসরাই পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে। এরআগে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনও করেন। গত বছরের ১২ আগস্ট ছকিনা বেগম ও তার স্বামী নজরুল ইসলাম পুনরায় ঝামেলা করলে আমরা সেনাবাহিনীর মিরসরাই ক্যাম্পে অভিযোগ করি। সেনাবাহিনী আমাদের উভয়পক্ষকে ডাকেন। ওইসময় ছকিনা বেগম ও তার স্বামী নজরুল ইসলাম আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ জায়গায় প্রবেশ করবে না মর্মে মুছলেকা দেয়। সর্বশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার জুমার সময় ছকিনা বেগম ও তার মেয়ে আখি, স্বামী নজরুল ইসলাম উক্ত জায়গায় পুনরায় প্রবেশের চেষ্টা করলে আমরা বাধা দিই। পরবর্তীতে ছকিনা বেগম আমাদের উপর হামলা করে। আমরা এ ঘটনায় মিরসরাই থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে ছকিনা বেগম জানান, জায়গা দখলের অভিযোগ সত্য নয়। উক্ত জায়গা আমি কিনেছি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সেলিনা আক্তার সহ তার ভাই ও বোনেরা মিলে আমাকে মারধর করে বিদ্যুতের পিলারে বেঁধে রাখে। এঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান জানান, গত শুক্রবার সম্পত্তি সংক্রান্ত মহিলাদের দু’টি পক্ষের বিবাদকে কেন্দ্র করে থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এসেছে। আমরা অভিযোগ দু’টি আমলে নিয়ে জিডি আকারে গ্রহন করেছি। বর্তমানে তদন্ত চলছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন