মেক্সিকো উপসাগরের (ইংরেজিতে গাল্ফ অব মেক্সিকো) নাম পরিবর্তন করে ‘গাল্ফ অব আমেরিকা’ করতে চান যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
মেক্সিকো থেকে আগত হিস্পানিক অভিবাসীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব ট্রাম্প। দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি ঘোষণা করলেন, এবার মেক্সিকো উপসাগরের নামটাই বদলে দিতে চান তিনি!
আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হবেন তিনি। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তার আগে মঙ্গলবার মার-এ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন ট্রাম্প।
সেখানেই বলেন, ‘আমরা মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে আমেরিকা উপসাগর করতে যাচ্ছি। যেখানে একটি সুন্দর বলয় রয়েছে। অনেকগুলো অঞ্চলকে ছুঁয়ে থাকা এই উপসাগরের উপযুক্ত নাম আমেরিকা উপসাগর।’
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী রিপাবলিকান নেতা আরও বলেন, ‘সঠিক সময়ে’ তার সরকার মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপ নেবে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে মেক্সিকো দিয়ে আসা অভিবাসীদের ঠেকাতে সীমান্তে উঁচু বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করিয়েছিলেন ট্রাম্প। প্রতিবেশী দেশটিকে আবারও নিশানা করে তিনি বলেন, ‘এটা (মেক্সিকো) একটা বিপজ্জনক দেশ।’
এর আগে সম্প্রতি ট্রাম্প পানামা খাল দখল করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয়, এরপর কানাডা ও গ্রিনল্যান্ড নিয়েও একই ধরনের বক্তব্য দেন তিনি। এমনকি এর জন্য শক্তি প্রয়োগও করতে হয়, সেটাও করবেন।
গত মাসে প্রথমে তিনি কানাডার কর্মকর্তাদের জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাদের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীকে ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করে নিতে পারে।
এরপর তিনি পানামা খালের দখল ফিরিয়ে নেয়ারও হুমকি দেন। এরপর জানান গ্রিনল্যান্ড কিনে নেয়ার ইচ্ছার কথা। যুক্তরাষ্ট্র এই খাল তৈরি করলেও প্রায় ২৫ বছর ধরে এর নিয়ন্ত্রণ মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার হাতেই।
নির্বাচনে জয়ী হওয়া পর সম্প্রতি কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন ট্রাম্প। তা থেকে জানা যায়, পানামা খাল ব্যবহার করা নিয়ে ‘অযৌক্তিক’ মাশুল আরোপ করে পানামা যুক্তরাষ্ট্রকে ‘প্রতারিত’ করছে।
ট্রাম্পের মতে, মধ্য আমেরিকার এই দেশের আচরণ বিশেষভাবে ‘আপত্তিকর’। কারণ তারা জানে যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতি কোনো এককালে ‘অসাধারণ উদারতা’ দেখিয়েছে।
ট্রাম্প দাবি করেন যে, বর্তমানে খাল পরিচালনা করছেন চীনা সেনারা। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার এই দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে বিশ শতকের শুরুতে খনন করা পানামা খাল একসময় যুক্তরাষ্ট্রই পরিচালনা করত। ১৯৯৯ সালে তা পানামার হাতে হস্তান্তর করা হয়।
ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের বিপরিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো। মধ্য আমেরিকায় অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ ওই জলপথটির ওপর নিজেদের সার্বভৌমত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে মুলিনোর একটি রেকর্ড করা বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘পানামা খাল ও এর আশপাশের এলাকার প্রতি ইঞ্চি জায়গা পানামার অন্তর্গত এবং তা পানামারই থাকবে।’
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন