সিএন প্রতিবেদন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, আমরা সামগ্রিক চট্টগ্রামে গণমানুষের মাঝে একটা প্রভাব (ইমপ্যাক্ট) তৈরি করতে চাই। সেটা হলো- ময়লা যত্রতত্র ফেলা যাবে না। এটার জন্য আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেলও দিতে পারি। আমরা টাকার জরিমানায় না গিয়ে দুই একদিনের জন্য জেলও দিতে পারি। ডকুমেন্টেশনও করা যেতে পারে। যারা ময়লা ফেলছে ছবি তুলে রাখা যেতে পারে। প্রথমে মানুষজনের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এরপর সর্তক করতে হবে। সর্বশেষ শাস্তির দিকে যেতে হবে। ধীরে ধীরে এসব কাজ করলে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন। এর আগে উপদেষ্টা চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, আমরা যে শুধু চট্টগ্রামে আসলেই জলাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলি তা নয়, বাহিরেও নিজ উদ্যোগে কথা বলি। উপদেষ্টা পরিষদে আমরা চট্টগ্রামের চারজন উপদেষ্টা এটার (জলাবদ্ধতা নিরসন) দায়িত্বে আছি। প্রতি সপ্তাহে আমরা একজন উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আসব, আপনাদের সাথে থাকার জন্য। এটার মানে এই না যে আপনাদের কাজের ফিরিস্তি আমরা নেব। আমরা আসব এ কারণে, যেন আমাদের কাজের সীমাবদ্ধতা যথাসময়ে অ্যাড্রেস করতে পারি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বহুমুখী কাজ করতে পারে। যে সকল পরিবার সবকিছু মেনে ট্যাক্সের টাকা দিচ্ছে, তাদের ওই টাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টাকা থাকছে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার টাকাও থাকছে। এসব কিছু যারা শতভাগ মান্য করবে তাদের আমরা প্রশংসিত করতে পারি। আর যারা মান্য করবে না, ধীরে ধীরে তাদের তিরস্কার, আইনের আওতায়ও আমরা আনতে পারি।
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, আমি সবার কথা শুনেছি। নোটও নিয়েছি। এগুলো আমরা ঢাকায় বসে আলোচনা করব৷ সেবা সংস্থাগুলোর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আমাদের থাকবে৷ আমরা সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি, আগামী বর্ষার মৌসুমে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটা জলাবদ্ধতা নিরসনে দৃশ্যমান অগ্রগতি প্রদর্শন করতে পারব।
উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম শহরে একটা অগ্রগতি চোখে পড়েছে। রাস্তাঘাট আগে ময়লা অধ্যুষিত ছিল। এখন অনেকটা পরিচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে। আমি মনে করি এটা একটা উন্নতি। আমরা আশা করছি আগামীতে আমরা দেখতে পারব, এটা আরও বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হচ্ছে।
ময়লা নিষ্কাশনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির পরামর্শ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ময়লা নিষ্কাশন এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলা নিয়ে আগামী রোজার আগেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলে গণসচেতনতা তৈরি করতে পারি, তাহলে এটা অনেক বড় একটা কাজ দেবে।
ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, আমাদের অনেক কিছু করণীয় আছে। আমরা শুরু করেছি মাত্র। আমাদের এই ধারাবাহিকতাটা যেন কোনোভাবেই ক্ষুন্ন না হয়।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এটার জন্য স্থায়ী সমাধান হচ্ছে ময়লাকে সম্পদে পরিণত করা। এটা আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছেও তুলে ধরেছি। তিনি এটাকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন।
মেয়র আরও বলেন, বৃষ্টির পানি বাড়ির ছাদে সংরক্ষণ করা গেলে জলাবদ্ধতা কিছুটা হলেও কমবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন সেবাসংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ।
সিএন/এমটি
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন