শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

শেষ হলো বাংলাদেশ সোসাইটির ভোট জমা, আয় সাড়ে প্রায় ৩ লাখ ডলার

বৃহস্পতিবার, জুলাই ৪, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

বাংলাদেশ সোসাইটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন আগামী অক্টোবরে। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। গত ৩০ জুন ছিল বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য হওয়ার শেষে সময়। ৩০ জুনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী এবং প্যানেলের মধ্যে ছিল ভোট জমা দেওয়ার একটা অলিখিত যুদ্ধ। সেই যুদ্ধ শেষ হয়েছে।

বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০ জুন বিকেল ৪টার মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটির ভবনে প্রবেশ করতে হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ীই উভয় প্যানেলের প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা সোসাইটির ভবনে প্রবেশ করেন। ঠিক ৪টা সময় বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ঘোষণা দিয়ে সোসাইটির দরজা বন্ধ করে দেন। যারা ভেতরে ছিলেন তারা ভোটার ফরম পূরণ করে জমা দেন।

আবার কোনো কোনো প্যানেলের পক্ষ থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটার ফরম পূরণ করেন। অনেককেই দেখা গেছে, তারা যেন পরীক্ষায় নেমেছেন। ভোটার বা মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও ফোনের সুবাদে নাম, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য নিয়ে ফর্ম জমা দেন। আবার ট্যাক্সড ম্যাসেজেরও সাহায্য নেওয়া হয়। আবার অনেকে ৪টার পরে আসে ভোট জমা দিতে পারেননি। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে এই কর্মকাণ্ড।

ভোট জমা দেওয়া শেষে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া মধ্যরাতে মোট ভোটারের সংখ্যা এবং অর্থের পরিমাণ ঘোষণা করেন। এই সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সহ- সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ নওশাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কামাল ভূইয়া, ক্রীড়া সম্পাদক মাইনুল উদ্দীন মাহবুব, প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, সদস্য আক্তার বাবুল ও সাদি মিন্টু, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আজিমুর রহমান বোরহান, আতোয়ারুল আলম এবং একটি প্যানেলের প্রার্থীরা।

আব্দুর রব মিয়া সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সদস্য, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা প্রায় দুই মাস আগে ভোটার বানানোর কার্যক্রম শুরু করি।

তিনি বলেন, সাধারণ সভার সময় সদস্য করা হয়েছিল ২৯০ জন। লাইফ মেম্বার ৮৫৩ জন। মোট ১ হাজার ১৪৩ জন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত (৩০ জুন) ভোটার হয়েছেন ১১ হাজার ১৮৭ ভোট। সব মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৩০ ভোট।

এ সময় সভাপতি প্রার্থী আতাউর রহমান সেলিম মোট কত ডলার আয় হয়েছে—এমন প্রশ্ন তুললে জবাবে সভাপতি বলেন, ১৭ হাজার ১৮৭ ভোটার গুণ ২০ করলেই অর্থের পরিমাণ বের হয়ে যাবে।
এ সময় সোসাইটির কর্মকর্তারা বলেন, মোট আয় হয়েছে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০ ডলার।

এর পর ভোটার সংখ্যার গরমিল নিয়ে আরেকটা প্রশ্ন করেন আতাউর রহমান সেলিম।তিনি জানতে বলেন, আমরা যখন সোসাইটি অফিসে আসি তখন আপনাদের একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, আজাকে (৩০ জুন) আগ পর্যন্ত ভোটার সংখ্যা ছিল ৫ হাজার সামবিং। এখন সভাপতি বলছেন ৭ হাজার সামথিং। ২ হাজার ভোটের ব্যবধান কীভাবে হয়? আমাদের অর্থ গুনে দেখাতে হবে এবং ভোটের মুড়ি দেখাতে হবে। আতাউর রহমান সেলিমের সঙ্গে যোগ দেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের একাংশের সভাপতি বদরুল হোসেন খান, সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা কাজী তোফায়েল ইসলাম এবং মফিজুল ইসলাম রুমি।

তারা এক পর্যায়ে বলতে গেলে গায়ের জোরে অর্থ গুনেন এবং ভোটের মুড়িও গুনেন।বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তাদের তারা বাধ্য করেন এই কর্মকাণ্ডগুলো করতে। সোসাইটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য কর্মকর্তারা এ সময় ধৈর্য পরীক্ষা দেন। তারা ইচ্ছা করলে সিকিউরিটি দিয়ে তাদের বের করে দিতে পারতেন। কিন্তু তারা তা করেননি। তাদের ভোটের এবং অর্থের হিসাব দেওয়ার পর তাদের ভদ্রলোকের মত চলে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা না গিয়ে এক রকম হেনস্তা করলেন সোসাইটির কর্মকর্তাদের। সোসাইটির কর্মকর্তারা অসহায়ের মতো তাদের অর্থ গুনতে এবং মুড়ি গুনতে দেন। অর্থ গুনে এবং ভোটের মুড়ি গুনে তারা অসংগতি না পেয়ে চুপে চুপে বেরিয়ে যান।

দুপুর থেকেই বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যালয়ে দুপুর থেকেই ভোটার জমা দেওয়ার কর্মকাণ্ড শুরু হয়। বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তারা সুশৃঙ্খলভাবে ভোট জমা দেন। এই সময় বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান কর্মকর্তা ছাড়াও সাবেক কর্মকর্তা এবং কমিউনিটির কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এম কে জামান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, তপন জামান, আবুল কাশেম চৌধুরী, আক্তার হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান কামরুল, নাঈম টুটুল, জাহাঙ্গীর সরোয়ার্দী, সালেহ আহমেদ মানিক, বগুড়া সমিতির সভাপতি মহব্বত আকন্দ, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক, সাধারণ সম্পাদক ইউছুপ জসীম, কোষাধ্যক্ষ মহি উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজু মিয়া, কামাল ভুইয়া, শাহাদাত হোসেন, মোহাম্মদ বাবুল, গোলাপগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি এবাদ চৌধুরী, আতিকুল হক আহাদ, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক মাহবুব প্রমুখ।

এই ভোটদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনী যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এখন দেখার বিষয় কারা যুদ্ধে জয়ী হন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন