মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

হিমাঙ্কের নিচে কবিতার উষ্ণতায় ঊনবাঙালের সভা

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪

প্রিন্ট করুন

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত কবিতা’- এই থিমের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ঊনবাঙালের ৪৬তম সাহিত্যসভা। নির্ধারিত বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন সমকালীন বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ কবি কাজী জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। এ ছাড়াও ঢাকা থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বিজয় দিবসের মাসে অনুষ্ঠিত এই সভায় বাড়তি মাত্রা যোগ করেন। অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন নাট্যজন মুজিব বিন হক, সাহিত্যানুরাগী মুশফিক চৌধুরী, পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট রওশন হক।

ঊনবাঙালের প্রথা অনুযায়ী এ মাসের জন্য নির্বাচিত আবৃত্তি শিল্পী আহসান হাবিব, জিএম ফারুক খান ও দিমা নেফারতিতি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। এ মাসের নির্বাচিত কবি সুমন শামসুদ্দিন পড়ে শোনান তার রচিত তিনটি মুক্তিযুদ্ধের কবিতা। এ ছাড়া, স্বরচিত কবিতা পড়েন সোহেল হামিদ, এসএম মোজাম্মেল হক, মো. নজরুল ইসলাম, ইশরাত মিতা, রেণু রোজা, সৈয়দ রাব্বী। নিজেদের লেখা গল্প ও মুক্ত গদ্যাংশ পাঠ করেন কাওসার পারভীন চৌধুরী ও ইমাম চৌধুরী। আবৃত্তি করেন আদিত্য শাহীন, মুন্না চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুটি দেশের গান করেন ঊনবাঙালের সদস্যরা। এতে অংশ নেন সোহানা নাজনীন, ফরিদা ইয়াসমিন, চমক ইসলাম, ইশরাত মিতা, মোজাম্মেল হক, সৈয়দ রাব্বী, সুমন শামসুদ্দিন, কাওসার পারভীন চৌধুরী।

কাজী জহিরুল ইসলাম তার থিমেটিক বক্তব্যে অ্যালান গিন্সবার্গ, জর্জ হ্যারিসন, জোয়ান বায়েজের নাম উল্লেখ করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর রচিত গান ও কবিতার জন্য।

তিনি বলেন গিন্সবার্গের কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ এবং জর্জ ও জোয়ানের ‘বাংলাদেশ’ গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আন্তর্জাতিক কমিউনিটির সমর্থম জুগিয়েছে। বাংলাদেশী কবিদের প্রায় সকলেই মুক্তিযুদ্ধের ওপর কবিতা লিখেছেন।’

জহিরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘এখন আমরা যারা কবিতা লিখছি এবং শিল্প-সাহিত্যের চর্চা করছি, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ হতে হবে, বিজয়ের মাসে এটিই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

আবু জাফর মাহমুদ জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের শত্রুকে তা চিহ্নিত করে বাকী পৃথিবীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে।’

ঊনবাঙালের ঐক্য ও প্রত্যয়ের প্রশংসা করেন আবু জাফর।

মুজিব বিন হক বলেন, ‘আমরা সব সময় একজন বীরের প্রতীক্ষায় থাকি, এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, সবাইকেই বীর হয়ে উঠতে হবে।’

অতিথি ও সদস্যরা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যাওয়া তাপমাত্রাকে তুচ্ছ করে নিজ হাতে তৈরি করা সুস্বাদু খাবারের পশরা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ঊনবাঙাল সভার এই কাব্যিক মিলনমেলায়। শুদ্ধ শিল্পের নিবিড় চর্চা – ঊনবাঙালের এই স্লোগানে মোড়া কাব্যিক উষ্ণতা বিকাল চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ঊষ্ণ রাখে অভ্যাগত সবাইকে। এখন থেকে ঊনবাঙাল সভা ব্যবস্থাপনা কমিটি সভা আয়োজনের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম চৌধুরী, সদস্য সচিব সুমন শামসুদ্দিন, সদস্য হিসেবে থাকবেন সৈয়দ ফজলুর রহমান, রওশন হক, সৈয়দ রাব্বী ও কাওসার পারভীন চৌধুরী।

সিএন/fআলী

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন