শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিরোনাম

৬০ মাস বেতন না পাওয়ার হতাশায় সাংবাদিকের আত্মহত্যা ভারতে

শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০২২

প্রিন্ট করুন

চলমান ডেস্ক: বছরের পর বছর বেতন না পাওয়ার এক পর্যায়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছেন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর অভিজ্ঞ এক সাংবাদিক। হতাশায় গত রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) অফিসের নিউজ রুমেই তিনি আত্মহত্যা করেন। খবর দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।

টি কুমার নামের ওই সাংবাদিকের মৃত্যুতে ভারতের সাংবাদিকতা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সাথে মাসের পর মাস বেতন ও বকেয়া না পাওয়া ও সাংবাদিকদের যে বৃহত্তর আর্থিক সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হয়, সেটি নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

৫৬ বছর বয়সী টি কুমার ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ায় (ইউএনআই) ফটো জার্নালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই সাথে টি কুমার ইউএনআইর তামিলনাড়ু ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় অফিসের নিউজ রুমে টি কুমার আত্মহত্যা করেন ও পর দিন সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সহকর্মীরা তার মরদেহ উদ্ধার করেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনআইর কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, ৬০ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান তাদের কোন বেতন পরিশোধ করেনি। এক বিবৃতিতে সংস্থাটির কর্মীরা বলেছেন, নিয়মিত বেতন না পাওয়ার কারণে তীব্র আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে ছিলেন টি কুমার। ইউএনআইর এডিটর-ইন-চিফ অজয় কুমার কাউল বেতন না পেয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানের এক সাংবাদিকের আত্মহত্যার ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। ‘পুলিশের এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা উচিত’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

অজয় কুমার বলেন, ‘আমরা যতটা জেনেছি, আত্মহত্যার আগে টি কুমার কোন সুইসাইড নোট রেখে যাননি। আত্মহত্যার মত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কারণ হিসেবে সেখানে তিনি আর্থিক চাপ বা বেতন বকেয়ার মত কিছু উল্লেখ করে যেতেন।’ তিনি আরো দাবি করেন, ‘কিছু মানুষ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। এটি কি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু? আমরা চাই পুলিশ এটি ভালভাবে তদন্ত করুক।’

টি কুমারের মৃত্যুর ঘটনা গত সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে টুইটারে প্রথম প্রকাশ করেছিলেন দেশটির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বিশ্ব বিশ্বনাথ। বার্তা সংস্থাটির কর্মীদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টিও সামনে এনেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ইউএনআই ৬০ মাস ধরে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে না। ইউএনআইয়ের সব কর্মী কিস্তির মাধ্যমে তাদের মাসিক বেতন পাচ্ছেন। কিন্তু সেই কিস্তিও নিয়মিত পরিশোধ করা হয় না।’ তিনি অভিযোগ করেন, কর্মীদের মানসিক চাপের মধ্যে ফেলছে ইউএনআই। বেতন না দেয়া ও মানসিক চাপের কারণে একজন চমৎকার সাংবাদিক ও খুবই ভাল একজন মানুষ আত্মহত্যা করলেন।

বিশ্ব বিশ্বনাথ আরো বলেন, ‘টি কুমার অন্য কোথাও নয়, চেন্নাইয়ে অবস্থিত ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ার তামিলনাড়ু অফিসের সেন্ট্রাল হলে আত্মহত্যা করেছেন। তার পুরো জীবনটা যে ইউএনআই ধ্বংস করেছে, এটি তিনি অনুভব করেছিলেন ও এখানে আত্মহত্যা করা সেটিরই ইঙ্গিত।’

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন