রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

শিরোনাম

৬২ শতাংশ তামাক পণ্যের মোড়কে মুদ্রণ করা হচ্ছে না স্বাস্থ্য সতর্কবাণী

সোমবার, জানুয়ারী ৩১, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্ক বাণী মুদ্রনের হার বৃদ্ধি পেলেও তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য ও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা। কারণ এ সতর্কবাণী ৬২ শতাংশ মোড়কের উভয় পাশেই মুদ্রণ করা হয় না। সচিত্র সতর্কবাণী হার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ জায়গা জুড়ে মুদ্রণের দাবি জানান তারা।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার একটি হোটেলে টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভির্সিটি ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) আয়োজিত ‘তামাকজাত দ্রব্যের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্ক বাণী বাস্তবায়ন-বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এসএম আব্দুল্লাহ, আর্ন্তজাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক  সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার নাসির উদ্দিন শেখ। প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক গণেশ চন্দ্র সাহা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিসিআরসির সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিসিআরসির সহকারী গবেষক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা।
এতে তিনি বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণের নানা পদ্ধতির মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান অন্যতম। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (সংশোধনী ২০১৩) এর ধারা দশ অনুযায়ী সব তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের উভয় পাশের মূল প্রদর্শনী তলের উপরিভাগের ৫০ শতাংশ এলাকা জুড়ে তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতি সম্পর্কিত সচিত্র সতর্কবার্তা দিতে হবে।’

ফারহানা জানান, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গত সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের আটটি বিভাগের ২৪ জেলার এক হাজার ৫৫২টি তামাকজাত দ্রব্যের মোড়ক থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

টিসিআরসির গবেষণায় ৮২ শতাংশ তামাক পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া গেছে। ৬২ শতাংশ মোড়কের উভয়পাশে এ সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হয়নি। ৫৮ শতাংশ মোড়কেই পঞ্চাশ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হয়েছে, ২৮ শতাংশ মোড়কের উপরের দিকে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রিত হয়েছে, চার শতাংশ মোড়কে ছবির সাথে লিখিত বার্তা দেয়া হয়নি, ৪ শতাংশ মোড়কে আইনে প্রদত্ত ছবি না দিয়ে পাশ্ববর্তী দেশের ছবি মুদ্রণ করতে দেখা গেছে। এছাড়া ১৮ শতাংশ মোড়কের লিখিত সতর্কবাণী কালো জমিনে সাদা অক্ষরে মুদ্রিত হয়নি, ৭১ শতাংশ বিড়ির মোড়কের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ব্যান্ডরোল দিয়ে ঢেকে থাকতে দেখা গেছে ও ৫১ শতাংশ মোড়কেই ‘শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদিত’ মর্মে কোন বাণী দেয়া হয়নি এবং কোনো সিগারেটের কার্টনেই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া যায়নি।

গণেশ চন্দ্র সাহা তামাক বিরোধী আন্দোলনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন। একই সাথে তিনি গবেষণা ফলাফল উন্মুক্ত করার পরামর্শ দেন।

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন