আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ফের চালু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডেন্ট ভিসা কার্যক্রম। তবে এবার আবেদনকারীদের জন্য বাড়তি কিছু শর্ত যুক্ত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর অন্যতম হলো—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো ‘পাবলিক’ বা উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীদের অতীত কার্যক্রম ও মনোভাব বিশ্লেষণ করতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী মনোভাব রাখে এমন কেউ যেন স্টুডেন্ট ভিসা না পায়—এমন লক্ষ্যে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকে আরও কঠোর করেছে দেশটির প্রশাসন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, প্রতিষ্ঠান, সংস্কৃতি কিংবা সংবিধানের মূলনীতির বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাব পোষণ করে, তাদের শনাক্ত করতে নতুনভাবে সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মূলত ২০২৪ সালের মে মাসের শেষদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে এই ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী মনোভাবসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ঠেকাতে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে নেওয়া হয়েছিল এ পদক্ষেপ।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, শুধু ‘এফ’ ক্যাটাগরির স্টুডেন্ট ভিসা নয়, বরং কারিগরি শিক্ষার জন্য ব্যবহৃত ‘এম’ ভিসা এবং বিনিময় প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত ‘জে’ ভিসাও এর আওতাভুক্ত থাকবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, আবেদনকারী যদি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত রাখেন, তাহলে তা তার কার্যক্রম গোপন করার চেষ্টা হিসেবে ধরে নেওয়া হবে।
এছাড়া ভিসা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন সেসব আবেদনকারীকে চিহ্নিত করেন যারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করে, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে, বা ইহুদি-বিরোধী সহিংসতায় জড়িত।
বিশ্লেষকদের মতে, এ পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নজরদারির অংশ। ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বামপন্থী’ বলে অভিহিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী। তার অভিযোগ, এসব প্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ ও ইহুদি-বিরোধী কার্যক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি।
এই অভিযানের অংশ হিসেবে শত কোটি ডলারের সরকারি অর্থ সহায়তা স্থগিত, শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল এবং বিতাড়নের চেষ্টাও করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। যদিও এসব সিদ্ধান্তের অনেকগুলোই আদালতের নির্দেশে আপাতত স্থগিত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ওপেন ডোর্স’ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশটির কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশ্বের ২১০টিরও বেশি দেশ থেকে ১১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন