শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে গুরুতর অসুস্থ রেলওয়ের ২০ গেইট কিপার

মঙ্গলবার, মার্চ ১, ২০২২

প্রিন্ট করুন

ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের মান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের এক হাজার ৮৮৯ জন গেইট কিপারের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের দাবিতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য ও বাংলাদেশ রেলওয়ে এক হাজার ৮৮৯ জন গেইট কিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল’ এর উদ্যোগে কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের আমরণ অনশন মঙ্গলবার (১ মার্চ) তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রেখেছেন গেইট কিপাররা। দীর্ঘ সময় অনশনের ফলে ইতিমধ্যে প্রায় ২০ জন গেইট কিপার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মধ্যে কুলাউড়া সেকশনের রায়হান, টঙ্গির লাকী আক্তার ও ফেনীর হালিমা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং যশোর সেকশনের চামেলি বেগম, শ্রীমঙ্গলের আকুল মন্ডল, জামালপুরের কাকলি বেগম ও শ্রীমঙ্গলের কাউছার আহম্মেদ অনিক মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিদের অনশন স্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

গত ৭২ ঘন্টা ধরে কমলাপুরের খোলা আকাশের নিচে গেইট কিপাররা অনশন চালিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয় অথবা বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার কোন সুর্নিদিষ্ট ঘোষণা আসেনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গেইট কিপাররা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। অনশনের কারণে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

কর্মসূচিতে গেইট কিপাররা বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের মান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নম্বর ৪৭০ ই/গেইট কিপার নিয়োগ/প্রকল্প/সিই পূর্ব-২০১৬ (ডব্লিউ), ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর, বিজ্ঞপ্তি নম্বর এসেট ৬০১/৫ (নিয়োগ) প্রকল্প সিই/পশ্চিম ২০১৬ (ডব্লিউ), ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর মোতাবেক ১ হাজার ৮৮৯ জন গেইট কিপার অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োজিত আছি। এর মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য ও ৩২৫ জন নারী গেইট কিপার রয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের কর্মরত গেইট কিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ী করণে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত দৃশমান কোন উদ্যোগ নেয়নি। আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বহুবার স্মারকলিপি ও চিঠি দিয়েছি, আমাদের দুর্দশার কথা জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কোন কথায় কর্ণপাত করেনি।’

তারা বলেন, ‘নিয়োগের সময় গেইট কিপারদের বেতন নির্ধারণ করা হয় সর্বসাকুল্যে ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা। বিগত পাঁচ বছরে এ বেতন বাড়েনি। বেশির ভাগ গেইটকিপার তাদের নিজ জেলা ব্যতীত অন্য জেলায় চাকরি করেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে বাসা ভাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। অপর দিকে প্রায় সকলের বয়স ৩২ বছর অতিক্রম করায় অন্য চাকরিতেও ঢোকার সুযোগ নেই। প্রজ্ঞাপন মূল্যে অস্থায়ীভাবে সৃজনকৃত পদ হতে রাজস্ব খাতে পাঠানো  সম্ভব। অথচ আমাদের চাকরির মেয়াদ প্রায় পাঁচ বছর পার হয়েছে। তাই দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আমাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেন ঢাকা বিভাগের গেইট কিপার সুজন আহমদ, মো আল মামুন, কাওছার, মাহাবুব আলম মাফুল, আলফাহাজ, চট্টগ্রাম বিভাগের জাবেদুল হক, মো মাসুদুল ইসলাম, পাকশি বিভাগের রূপা পারভীন, কাজী পিয়াশ, সোহেল, ছোটন প্রমুখ।

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন