এস এল টি তুহিন: ‘আশ্রয়নের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশের ন্যায় বরিশাল জেলার সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে তৃতীয় ধাপে নির্মাণাধীন প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে ঘর পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান। তিনি প্রতিদিন সরজমিনে গিয়ে চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামের আশ্রয় প্রকল্পের ভূমিহীনদের গৃহনির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান ও ভূমি কর্মকর্তা ( এসিল্যান্ড) তারিকুল ইসলাম ছুটির দিনেও বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করেও আশ্রয়ন প্রকল্পে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে ভূমিহীনদের গৃহনির্মাণ কাজ ও সুবিধাভোগী মানুষের সার্বিক দিক খোঁজ খবর নেন।
আশ্রয়ন প্রকল্পের উপকারভোগীও সদর উপজেলা চরমোনাই ইউনিয়ন গিলাতলী গ্রামের আশ্রয় প্রকল্পের সভাপতি মো. আলম মৃধা বলেন, আমাদের উপহারের ঘর মজবুত ও ভালোমান বজায় রাখতে ইউওনও স্যার অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তিনি প্রতিদিন এসে কাজ পরিদর্শন করেন । তাছাড়া স্যার না থাকলে ইঞ্জি. জহিরুল স্যার বা সাথে তরুন নামের একটি ছেলে উপস্থিত থাকেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। তার এমন আন্তরিকতা প্রশংসার দাবিদার।
দ্বিতীয় ধাপের প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন কেন্দ্রের উপকারভোগী বাসিন্দা মনির বলেন, অনেক বছর আগে নদীতে বাড়ি ঘর ভেঙে যাবার পর ২ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাসমান ভাবে থাকতাম পাশ্ববর্তী একটি চরে। যেখানে বসবাসে দূর্ভোগের শেষ ছিলো না। সরকার ও বরিশালের ডিসি স্যার খুঁজে এনে কোন টাকা ছাড়াই এখানে ঘর ও জমি দিয়েছে। এই ঘর আমাদের একটি স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছে। বর্ষা হলে কষ্টের শেষ ছিলো না আমার । স্বপ্নেও ভাবিনি নিজেদের জায়গায় নিজেদের বাড়ি হবে। ইউএনও স্যার এত সুন্দর ঘর তৈরিতে সহায়তা কনরছব। যা প্রশংসা পাওয়ার বিষয়। আমরা সরকারকে এবং বরিশালের জেলা প্রশাসক ও ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।
সদর উপজেলা সূত্রে জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্প বরিশাল সদর উপজেলায় প্রথম দফায় ১৫৭ টি দ্বিতীয় দফায় ১০০ টি এবং তৃতীয় দফায় ৪০ টি গৃহ নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ২০৭টি গৃহ নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ৫০ টি এবং তৃতীয় দফার ৪০ টি গৃহ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ঘরগুলো ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকায় নির্মাণ করা হয়। তৃতীয় দফার ঘরগুলোর টেকসই ও গুণগত মান বিবেচনা করে ঘর প্রতি ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা করে নির্মাণ করা হয়েছে। সদর উপজেলা চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামে গত বছরে ১৮৪টি ঘর নির্মাণ করে উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে গিলাতলীতে ৪০টি এবং চরকাউয়া গ্রামে ৫০টি গৃহনির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সেই সাথে ঘর নির্মাণে গুনগতমানের বিষয়ে সদা তৎপর রয়েছেন ইউএনও।
জানতে চাইলে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনিরুজ্জামান বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে এবং ৯০টি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের গৃহনির্মাণ কাজ শেষ হলেই গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এসব ঘরে আশ্রয় পাওয়াদের অধিকাংশই রাস্তার ধারে ফুটপাত বা কারও আশ্রয়ে বসবাস করতেন। এখন তারা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর উপহার পেলেন। এর ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার শতভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাদের জমি ও ঘর নাই, তাদের বসবাসের জন্য বাড়ি করে দেওয়া হবে।
তুহিন/আইআই/সিএন
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন