বছর ঘুরে আবার এলো মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদের এ আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মাঝে। ঈদ উৎসব উদযাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ পোশাক। শুধু নিজের জন্য নয় সামর্থ্যবানরা কাছের মানুষদেরও নিত্যনতুন পোশাক কিনে উপহার দেয়। ঈদ আনন্দ সবার মাঝে ভাগাভাগি করতে অনেকে আবার সাধ্যের মধ্যে গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেয় পোশাক কিংবা অর্থ। পোশাক ডিজাইনাররা উৎসবকেন্দ্রিক পোশাকের ডিজাইন করেন ছোট থেকে বড় সকলের পছন্দ অনুযায়ী। ঈদুল ফিতরের উৎসবে শাড়ি ও পাঞ্জাবি নিয়ে লিখেছেন -জলি রহমান
শাড়ি : যেকোনো উৎসবে নারীর পছন্দের পোশাক শাড়ি। বারো হাতের এ পোশাকের ওপর নারীর ভালো লাগা চিরন্তন। বাংলাদেশে তৈরি শাড়ি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। ঢাকাই মসলিন, জামদানি এবং টাঙ্গাইলের সুতির শাড়ির জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। বিভিন্ন ফেব্রিকস দিয়ে তৈরি করা হয় এ পোশাকটি। হাল ফ্যাশনে মানুষের আগ্রহ যত বাড়ছে ততই বাড়ছে শাড়ি নিয়ে নানা ধরনের নান্দনিক কাজ। তবে কালের বিবর্তনে এসেছে রঙ, কাপড় ও ডিজাইনে বিভিন্ন পরিবর্তন। ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের সুতি, কাতান, বেনারসি ও জামদানির কদর যেমন বেড়েছে, তেমনি খাদি, অ্যান্ডি, কটন, সিল্ক ও হাফসিল্কের শাড়িও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এবারের ঈদ ফ্যাশনে বুটিকস হাউজ ও শপিংমলগুলোতে দেখা গেছে দুর্দান্ত সব শাড়ির কালেকশন। শাড়িতে নীল, বেগুনি, ম্যাজেন্টা, ফিরোজা, পেস্ট, সাদা, গোলাপি ও সবুজ রঙের আধিক্য লক্ষ্যণীয়। গরমের কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন সচেতন নারীরা পোশাক নির্বাচন করে থাকে। শাড়ির ক্ষেত্রেও একই রকম। তাই গরমে টাঙ্গাইলের সুতির শাড়ির পাশাপাশি অ্যামব্রয়ডারি, ব্লকপ্রিন্ট এবং প্রিন্টের শাড়ির চাহিদাও বেশ।
পাঞ্জাবি : যেকোনো অনুষ্ঠানে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরার জন্য প্রথমেই পুরুষরা বেঁছে নেয় পাঞ্জাবিকে। কেননা ঈদ মানেই নতুন পাঞ্জাবিতে নিজেকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা। পাঞ্জাবিতে যেমন ফুটে ওঠে ব্যক্তিত্ব তেমনি ফ্যাশনে আসে আভিজাত্য। এজন্য এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। হাল ফ্যাশনে পাঞ্জাবির কাটছাটে এসেছে নানা পরিবর্তন। ইদানীং তরুণদের কাছে কাবলি পাঞ্জাবি-পাজামার জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। পাঞ্জাবির কাপড় এবং ডিজাইনেও এসেছে বৈচিত্র্য। ছোট থেকে বড় সকলের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইনাররা তৈরি করছে পাঞ্জাবি। আর ঈদকে সামনে রেখে পাঞ্জাবির কালেকশনেও এসেছে নান্দনিকতা। সুন্দর রং এবং বাহারী ডিজাইনের সেমি শর্ট এবং কাবলি পাঞ্জাবি তরুণ প্রজন্মের বেশ পছন্দের। পুরুষের ঈদের পোশাক মানেই পাঞ্জাবি এরপরে অন্যকিছু। চৈত্রের তপ্ত গরমে পাঞ্জাবির পাশাপাশি অনেকে হয়তো শার্ট, পোলো ও টিশার্ট কিনবেন।
কিন্তু ঈদ উদযাপনে একটা পাঞ্জাবি না হলে কি আর চলে। ঈদের দিন সকালের নামাজ নতুন পাঞ্জাবিতে না হলে দিনটাই যেন অসম্পূর্ণ। ঈদের দিন উৎসবমুখর পরিবেশে দিনভর শাড়ি পরা প্রিয়জনের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতেও বেশিরভাগ পুরুষ বেঁছে নেয় পাঞ্জাবি। যেহেতু প্রতিনিয়ত রোদের তীব্রতা বাড়ছে, তাই ঈদ ফ্যাশনে সুতি পাঞ্জাবি হতে পারে অবিচ্ছেদ্য অংশ। রঙের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল এবং গাড় রং প্রাধান্য পায় তরুণ প্রজন্মের কাছে। হাল ফ্যাশনে হালকা ডিজাইন, স্ক্রিন, ব্লক কিংবা স্ট্রাইপ করা পাঞ্জাবির দিকে ঝুঁকছেন ফ্যাশনেবল তরুণরা। গরম আর বৃষ্টির কথা ভেবেই ঈদের পাঞ্জাবির কাপড়ে এসেছে ভিন্নতা। লা রিভ, রঙ বাংলাদেশ, ইজি, আড়ং, কে ক্র্যাফটসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস এবং যেকোনো শপিং মলে পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের পাঞ্জাবি। দেশীয় ফ্যাশন হাউসে পাঞ্জাবির দাম পড়বে ১৫’শ থেকে ৪ হাজারের মধ্যে আর মার্কেটে পেয়ে যাবেন ১ হাজার থেকে ৪ হাজারের মধ্যে। ছোটদের পাঞ্জাবির দাম হবে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন