শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

কফিনে ডেডবডি থাক বা না থাক; বিএনপি পলিটিক্যালি ডেড বডিতে পরিণত হয়ে গেছে

রবিবার, আগস্ট ২৯, ২০২১

প্রিন্ট করুন
1200px বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পতাকা.svg 1

ঢাকা: নৌপরিবহন প্রতি মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত কমিশন দরকার। জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত জানা দরকার; তাহলেই জানা যাবে কফিনে কি আছে। জিয়ার লাশ নিয়ে টানাটানি হচ্ছে। কফিনে জিয়ার লাশ সম্পর্কিত প্রধান  মন্ত্রীর তথ্যভিত্তিক বক্তব্যকে মীর্জা ফখরুল হাস্যকর বলছেন; তার চিকিৎসা করানো দরকার। কফিনে ডেডবডি থাক বা না থাক; বিএনপি পলিটিক্যালি ডেডবডিতে পরিণত হয়ে গেছে।’

প্রতি মন্ত্রী রোববার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের অডিটরিয়ামে বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখা আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের সে দিনের সেই ঘটনায় অনেক মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে। সেই সময়ে যারা বেঁচেছিলেন, তারা পরবর্তী অস্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। সেগুলো এখন বড় প্রশ্ন। কাজেই সেটারও একটা রহস্য উদ্ঘাটন করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ব্যাহত করতে কিছু মতলববাজ সরকার ও সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে দ্বন্ধ তৈরি করার চেষ্টা করছে। যেন সরকারের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন যেন না হয়, সে জন্য সরকারের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দ্বন্ধ তৈরি করার জন্য মতলববাজরা মাঠে নেমেছে। তাদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। তারা আমাদের সঙ্গেই আছে। আমাদের সঙ্গে থেকেই তারা ছুরিকাঘাত করতে চায়।’

প্রতি মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া পরিবার অপরাধী এবং খুনী পরিবার, তারা এসবের ফল ভুগছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একাত্তরের পরাজিত শক্তির ধারাবাহিকতা আমরা দেখেছি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ১৬ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ পাল্টে গেছে। জয় বাংলা শ্লোগান, জিন্দাবাদ হয়ে গেছে। আমদের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাওয়া অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক হয়ে গেছে। সংবিধানের চরিত্র পাল্টে দেয়া হয়েছে। পৈশাচিক হত্যাকান্ডের বিচার করা যাবে না বলে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। খুনীদের দেশ থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হয়েছে। খুনীদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। কুখ্যাত শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হয়েছে। আব্দুল আলীমকে খাঁচার মধ্যে বন্দী করে রাখা হয়েছিল, সেই আব্দুল আলীমকে মন্ত্রী বানানো হয়েছে। গোলাম আজমের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এগুলো কে করেছে; জিয়াউর রহমান। তারপরও কী আমাদের বলতে হবে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত নয়!’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডকে জায়েয করার জন্য কত হত্যাকান্ড করেছে জিয়াউর রহমান। যদি সেনাবাহিনীর মধ্যেই চিন্তা করি, ১৮টি ক্যু হয়েছে, সেই হত্যাকান্ডকে জায়েয করার জন্য শত শত নয়, হাজার হাজার শুধু সেনাসদস্যকেই হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডকে জায়েয করার জন্য শুধু অপরাধীদের পুনর্বাসন করে নাই। বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করে; কিন্তু তিনি (জিয়াউর রহমান) বাঁচতে পারেন নাই।’

তিনি বলেন, ‘অপরাধকে ঢাকতে গিয়ে জিয়া যে অপরাধ করেছিল, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা কী দেখতে পাচ্ছি, এ পরিবারটি একটি অপরাধী ও খুনী পরিবার হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের কাছে চিহ্নিত হয়েছে। আজকে তার সহধর্মিনী বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে অপরাধী হয়ে কারাবরণ করেছেন। তার এক সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে মানিল্ডারিং মামলায় পলাতক থেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। আরেকজন পলাতক আসামী হিসেবে বাইরে অবস্থান করছেন। কী করুণ পরিণতি হয়েছে এ পরিবারের!’

প্রতি মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের কাংখিত গর্বের জায়গায় পৌঁছতে পেরেছে। প্রধান মন্ত্রী আজকে বাংলাদেশকে সেই গর্ব ও অহংকারের জায়গায় আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এখন আর দরিদ্র দেশ নই। ঋণগ্রস্ত দেশ নই। আমরা এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারি। আমরা এখন পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছি। আমাদের কোন শিশু এখন স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দোরগোড়ায়। গ্রামগুলো আজ বর্ণিল হয়েছে। গৃহহীনদের ঘর করে দেয়া হচ্ছে। যেই বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পেছনে ঘুরত ঋণের জন্য, সেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিচ্ছে। এ বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের মঞ্জুরীর জন্য তদ্বির করত, সেই বাংলাদেশ এখন সুদানকে মঞ্জুরীর অর্থ দিচ্ছে।’

বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখার সভাপতি  অধ্যাপক মীর নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডাক্তার এসএ মালেক (ভার্চুয়ালী), বিএমএ এর সভাপতি ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ খান, বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সহ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টের ট্রাস্টি ডাক্তার সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহা পরিচালক অধ্যাপক মুর্তাজা কেআই কাইয়ুম চৌধুরী এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন