ইফতেখার ইসলাম: ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য কর্ণাটকে স্কুল-কলেজগুলোতে হিজাব বিতর্কে পুরো ভারতসহ বিশ্বজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ইতিমধ্যে বিষয়টি গড়িয়েছে হাইকোর্টে। তবে এই ইস্যুতে জেগে উঠেছে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন হিজবুত তাহরীত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যম্পাসে দেখা মিলেছে সংগঠনটির পোস্টার। যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে শঙ্কা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির তৎপরতায় ক্যম্পাসের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
সরজমিনে দেখা গেছে, চবির শহীদ মিনারের পাশে লেডিস ঝুপড়ির পাশে একটি দোকানের দোয়ালে টাঙানো হয়েছে পোস্টার। এছাড়া বঙ্গবন্ধু উদ্যানের দক্ষিণ পাশে রাস্ত ঘেঁষে থাকা ভবনের দালানেও একই পোস্টার লাগানো হয়েছে। যেখানে কর্ণাটাকের হিজাবের বিষয়টি আলোকপাত করে বড় শব্দে ‘ খিলাফত ছাড়া কে মুসলিম নারীদের হিজাব ও মর্যাদা রক্ষা করবে?- এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়। আরেক স্থানে লিখা হয় – ‘ হে সাহসী ও নিষ্ঠাবান অফিসারবৃন্দ, খিলাফত প্রতিষ্ঠায় নুসরাহ্ প্রদান করুন!
এছাড়া পোস্টারজুড়ে ছিলো নানা বিতর্কিত বিষয়। যেখানে কৌশলে ইসলামিক বিষয়গুলো টেনে এনে ‘হিজবুত তাহরীতের’ নেতৃত্বে ভারতীয় উপমহাদেশ শাসনে সহায়তা করার ডাক দেয়ার ইঙ্গিত করা হয়!
এইদিকে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে নিষিদ্ধ এই রাজনৈতিক সংগঠনের এমন পোস্টার দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, যে সংগঠন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ চবিতে তাদের তৎপরতা কোনভাবেই ভালো খবর নয়। আমরা চাইবো এসব কারা করছে তাদের খুঁজে বের করে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, হিজাব মুসলমানদের অধিকার। সেখানে কারো হস্তক্ষেপ করার কিছু আছে বলে আমাদের মনে হয় না। তবে এই বিষয়টিকে একটি মহল ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তা না হলে তাদের পোস্টারে হিজাবের বিষয়টিকে ব্যবহার করে শাসন ব্যবস্থার বিষয়টি আসতো না। আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এসব মুক্ত থাকুক।
এইদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে সিসিটিভি ক্যমেরা। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব জড়িতদের ধরে আইনেও আওতায় আনারও আহ্বান জানান সচেতন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি প্রক্টর ড.রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, রাতের আঁধারে এসব ঘটনা ঘটে থাকে। আমরাও বিষয়গুলো নিয়ে বেশ চিন্তিত। আমরা এই বিষয়গুলো নজরে রেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ শান্ত রাখতে যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সজাগ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ২০০১ সাল হতে আনুষ্ঠানিকভাবে হিজবুত তাহরীত দলটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর স্বরাষ্ষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক “জননিরাপত্তার স্বার্থে” -এ কারণ দেখিয়ে এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। দলটি পৃথিবীর অন্য অনেকগুলো দেশেও নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে।
আইআই/সিএন
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন