বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

কেন অস্পষ্ট গাজার শান্তিচুক্তি

বুধবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

উত্তর গাজায় ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই মঙ্গলবার ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

ইসরাইলি বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের সেনাবাহিনীর কাছাকাছি এসেছিলেন কয়েকজন। সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের গুলি করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। হামাসের পক্ষ থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যে গাজা শান্তিচুক্তি তৈরি হয়েছে তা অস্পষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞদের একদল মনে করছেন ইচ্ছে করেই এই চুক্তি অস্পষ্ট রাখা হয়েছে কারণ, এর ফলে দুই পক্ষকে চুক্তি মানতে রাজি করানো সহজ হয়েছে।

অন্যদিকে, অপরপক্ষের অভিমত, অস্পষ্টতার কারণে এই চুক্তি দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে।

গাজা উপত্যকার দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার। প্রস্থে ১০ কিলোমিটার। ইসরাইলের সেনা জানিয়েছিল, তারা প্রায় পুরো অঞ্চলটিই নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। বিশেষত উপকূলবর্তী অঞ্চল তাদের দখলে চলে গেছিল।

শান্তি চুক্তিতে বলা হয়েছে, জীবিত সব বন্দিকে মুক্তি দিলে ইসরাইলের সেনাকে গাজা ছেড়ে চলে আসতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ইসরাইলের সেনা ইয়েলো লাইন পর্যন্ত পিছিয়ে এসেছে।

এই ইয়েলো লাইন গাজার ভিতরেই অবস্থিত। ফলে এখনো গাজার অর্ধেক অংশ ইসরাইলের সেনার দখলে, এমনটা বলাই যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য. ইসরাইল পুরোপুরি গাজা ছেড়ে চলে যাবে না।

ট্রাম্প সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে ২০টির বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে যে সম্মেলন করেছেন, বিশ্লেষকদের মতে তা ছিল ‘প্রতীকী’। বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি। অবশ্য সম্মেলনে ট্রাম্প নতুন কিছু তথ্য প্রকাশ করেন।

তিনি জানান, গাজা নিয়ে তার ২০ দফা পরিকল্পনার অবশিষ্ট অংশ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সেই আলোচনা কোথায়, কীভাবে এবং কবে অনুষ্ঠিত হবে, সে সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।

সম্মেলনে ইসরাইল বা হামাস—কোনো পক্ষের প্রতিনিধিই উপস্থিত ছিলেন না। ফলে এই বৈঠকে বাস্তব কোনো সমঝোতা বা অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। আলোচনার প্রধান বাধা হিসেবে রয়ে গেছে তিনটি বড় প্রশ্ন।

এগুলো হলো হামাসের ভবিষ্যৎ কী হবে, ইসরাইলি সেনা কবে গাজা থেকে সরে যাবেন এবং যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা কে শাসন করবে?

এসব ইস্যু সমাধানে দীর্ঘ ও জটিল আলোচনার প্রয়োজন হবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। ট্রাম্প সম্মেলনে সফলতা দাবি করলেও লক্ষণীয় বিষয় হলো, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যা এই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতের মূল কেন্দ্রবিন্দু—সে বিষয়ে একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি তিনি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন