কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। জনিত অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের কারণে অনেকের মধ্যেই বাড়ছে কোলেস্টেরলজনিত ঝুঁকি।
তবে কোলেস্টেরল মানেই ক্ষতিকর নয়। এটি দুই প্রকারের—লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (LDL), যা খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত, এবং হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (HDL), যা ভালো কোলেস্টেরল। শরীরকে সুস্থ রাখতে HDL কোলেস্টেরল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস গরম পানি ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। এ ছাড়া ওটস মিল্ক, মেথি ভেজানো পানি কিংবা গ্রিন টি-ও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক হতে পারে।
অন্যদিকে এলডিএলকে বলা হয় খারাপ কোলেস্টেরল। কিছু ঘরোয়া পানীয় নিয়মিত সেবন করলে এই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে। কী সেসব পানীয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক—
গ্রিন টি : গ্রিন টি-তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিশেষ করে ক্যাটেচিন থাকে। এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে ২-৩ কাপ চিনি ছাড়া গ্রিন টি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

লেবু-গরম পানি কোলেস্টেরল কমায়
সকালে খালি পেটে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে অর্ধেক বা একটি গোটা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এটি শরীর থেকে টক্সিন দূর করে এবং মেটাবলিজম বা বিপাকহার বাড়ায়। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক।
মেথি ভেজানো পানি
এক চামচ মেথি বীজ সারা রাত এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করুন। এতে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য পাওয়া যায়। মেথিতে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরল শোষণ কমাতে সাহায্য করে।

আমলকীর রস কোলেস্টেরল কমায়
আমলকী ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের একটি চমৎকার উৎস। এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাজা আমলকীর রস (২০-৩০ মিলি) সামান্য পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে পান করা যেতে পারে।

আদা-রসুন-লেবুর মিশ্রণ
আদা, রসুন ও লেবু, এই তিনটি উপাদানই কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এক চামচ আদার রস, এক চামচ রসুনের রস ও এক চামচ লেবুর রস এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
ধনে বীজ ভেজানো পানি
দুই চামচ ধনে বীজ এক গ্লাস পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি ছেঁকে পান করুন। এতে কোলেস্টেরলের সমস্যা কমবে অনেকটাই। ধনিয়া বীজ হাইপোলিপিডেমিক গুণসম্পন্ন, অর্থাৎ মেদ ঝরাতে সহায়তা করে এই পানীয়।

ওটমিল : ওটসে থাকা বিটা-গ্লুকান নামক দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরল কমাতে খুবই কার্যকর। ওটস পানিতে বা দুধে (কম ফ্যাটযুক্ত) ফুটিয়ে পাতলা পানীয় তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে।
টমেটোর রস : টমেটোতে লাইকোপিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। বাড়িতে তৈরি তাজা টমেটোর রস (লবণ ও চিনি ছাড়া) পান করা স্বাস্থ্যকর।
তবে মনে রাখতে হবে, এই ঘরোয়া পানীয়গুলো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এগুলো কোনোটিই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
সব কোলেস্টেরল খারাপ নয় বলে ডা. রাশেদা আক্তার, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, বলেন:
“আমাদের শরীরের জন্য HDL বা ‘ভালো কোলেস্টেরল’ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি ধমনির দেয়ালে জমে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) সরাতে সাহায্য করে।”
রাশেদা আক্তার
ধনে বীজ ভেজানো পানি
দুই চামচ ধনে বীজ এক গ্লাস পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি ছেঁকে পান করুন। এতে কোলেস্টেরলের সমস্যা কমবে অনেকটাই। ধনিয়া বীজ হাইপোলিপিডেমিক গুণসম্পন্ন, অর্থাৎ মেদ ঝরাতে সহায়তা করে এই পানীয়।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন