নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। যদিও তিনি এই সিদ্ধান্তকে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় হিসেবে তুলে ধরেছেন, অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা, ট্রাম্পের আসল উদ্দেশ্য সম্ভবত গ্রিনল্যান্ডের বিপুল খনিজ সম্পদে হাত দেয়া।
আর্কটিক অঞ্চলের খনিজ ও জ্বালানি সম্পদের বিশাল ভাণ্ডার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। ২০০৮ সালে “কোল্ড রাশ” বা ঠাণ্ডা রাশের আওতায় এই অঞ্চলের সম্ভাবনার বিষয়ে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরফ কমে যাওয়ার ফলে নতুন সী রুট খোলার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে এবং খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান সহজতর হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর আর্কটিক অঞ্চলের বেশিরভাগ অর্থনৈতিক প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে, যা এই অঞ্চলের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এদিকে, গ্রিনল্যান্ডের ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ড প্রশাসন দ্রুত জানিয়ে দিয়েছে যে, ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা রয়েছে আলাস্কার আর্কটিক ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ রিফিউজে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান বৃদ্ধির, যা সম্পদসমৃদ্ধ একটি অঞ্চল।
এছাড়া, কানাডা তার উত্তরাঞ্চলীয় গ্রে বে বন্দরের নির্মাণ কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা আর্কটিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং সম্ভাবনাকে আরো দৃঢ় করছে।
নরওয়ের মৎসজীবী সন্ড্রে আলনেস-বোনেসমো, যিনি আর্কটিক মহাসাগরে মাছ ধরেন, জানাচ্ছেন যে, এই অঞ্চলে কাজ করা অত্যন্ত কঠিন এবং বিপজ্জনক, বিশেষ করে শীতকালে যখন তাপমাত্রা -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। তবে তিনি বলছেন, “এটা বিপজ্জনক, তবে আর্কটিক মহাসাগরের শক্তি ও সৌন্দর্যকে সম্মান করতে শিখেছি।”
আর্কটিক অঞ্চলের খনিজ সম্পদের প্রতি আন্তর্জাতিক আগ্রহ বেড়েছে, কিন্তু বর্তমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জসমূহের কারণে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন