চট্টগ্রাম: আদালতের রায় পালন না করায় চট্টগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক ও বর্তমান পাট সচিব মো. আবদুল মান্নান, বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান ও চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আখতারসহ নয় জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (৪ জুলাই) আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
জানা যায়, ২০১১ সালে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার সরকারি গুনাগড়ি পাহাড় কেটে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে ও পাহাড় ধ্বংস করে। এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।
রুল শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৭ মে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারূল হক আকন্দের ডিভিশন বেঞ্চ রুল এ্যাবসলিউড করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। এসব নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে আগামী এক বছরের মধ্যে গুনাগড়ি পাহাড়কে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং সরকারের কাছ থেকে এ ব্যাপারে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা; পাহাড়কে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যে অর্থ খরচ হবে, তা যারা মাটি বিক্রি করার জন্য দায়ী, তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আদায় করা এবং যে সব সরকারি অফিসারদের দায়িত্ব পালনকালীন তাদের নিস্ক্রিয়তায় ওই পাহাড় ধ্বংস করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ওই রায় অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্তমান ও আগের দায়িত্ব পালনরত নয় জন সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে এইচআরপিবি কর্তৃক আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারা হলেন চট্টগ্রাম জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান, (বর্তমানে সচিব, পাট মন্ত্রনালয়), বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আখতার, বর্তমান পুলিশ সুপার এসএম রাশিদুল হক, বাশখালির সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাব্বির ইকবাল, বর্তমান ইউএনও সাইদুজ্জামান চৌধুরি, বাঁশখালী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক, মো. সাজাহান খান ও বর্তমান ওসি শফিউল কবির।
গত বুধবার (৩০ জুন) আদালত অবমানার আবেদন শুনানি শেষে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের আদালত ওই নয় জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন। ২০১৮ সালের ৭ মে’র আদালতের (রিট মামলা নম্বর ৬১৫৪/১১) রায় অমান্য করায় কেন তাদেরকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে না, তা জানাতে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আবেদনকারীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট রিপন বাড়ৈ।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন