ঢাকা: চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানীপণ্য জাহাজিকরণে বড় ধরনের কোন সমস্যা নেই। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে জাহাজ এবং খালি কন্টেইনারের সংকট নেই। গত ১৫ দিনে বাংলাদেশ হতে ২৬টি জাহাজ ছেড়ে গেছে; সেগুলোর ক্যাপাসিটি ছিল ৩৮ হাজার টিইইউএস (বিশ ফুটের কন্টেইনার)। কিন্তু জাহাজগুলো পণ্য পরিবহন করেছে ২৭ হাজার টিইইউএস। অর্থাৎ ১১ হাজার টিইইউএস স্পেস অব্যবহৃত থেকেছে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং বিভিন্ন অফডকে প্রায় ৪০ হাজার টিইইউএস খালি কন্টেইনার রয়েছে।
বুধবার (৭ জুলাই) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষ থেকে ‘চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানীপণ্য জাহাজিকরণ সংক্রান্ত’ এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় জানানো হয়, পণ্য ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘন্টা চালু রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণজনিত বিধি-নিষেধের সময়েও চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘন্টা চালু রয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য এবং কনটেইনার আনলোডিং, আমদানীকারক বরাবর ডেলিভারী এবং রপ্তানী কনটেইনার জাহাজে বোঝাই কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ২৩৬ টিইইউএস কনটেইনার, ১১ কোটি ৩৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৩ মেট্রিক টন কার্গো এবং চার হাজার ৬২টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে। যেখানে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৩০ লাখ চার হাজার ১৪২ টিইইউএস কনটেইনার, দশ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ২৭২ মেট্রিক টন কার্গো এবং তিন হাজার ৭৬৪টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কার্গো, কনটেইনার এবং জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ৩ দশমিক শুন্য ৯ শতাংশ এবং ৭ দশমিক ৯২ দশমিক ভাগ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
সভায় আরো জানানো হয়, ছোট খাটো যে সব সমস্যা আছে, সেগুলো নিয়ে চবক কাজ করছে। ভবিষ্যতে বন্দরের চাহিদা মোকাবেলা করা এবং সম্ভাব্য সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) সুলতান আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কন্টেইনার শিপিং এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশন (বাফা), বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো এসোসিয়েশন (বিকডা) এবং সংশ্লিষ্টরা যুক্ত থাকবে।
সভায় বাংলাদেশ হতে রপ্তানী বোঝাই কনটেইনার দ্রুত রপ্তানীর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কয়েকটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনাগুলো হল- শিপিং এজন্ট এবং মেইন লাইন অপারেটরগণের (এমএলও) মধ্যে ‘কমন ক্যারিয়ার এগ্রিমেন্ট’ করা; ডাইরেক্ট কলিং অব শিপ টু ফাইনাল ডেস্টিনেশন; এমএলওগণের মধ্যে কনটেইনার সরাসরি ইন্টারচেঞ্জ; ফ্রেইট ফরওয়ার্ডগণ কর্তৃক অফডকসমূহকে বিলম্বে কার্গো লোডিং প্লান না দেয়া; অফডকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
এসব প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে জাহাজ ও কন্টেইনার জট কমে আসবে। অধিক হারে কনটেইনার রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে।
ভার্চুয়াল বৈঠকে কাস্টমসের সদস্য (পলিসি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুজ্জামান, চবকের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা, বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হাতেমসহ এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস্ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কন্টেইনার শিপিং এসোসিয়েশন, বাফা এবং বিকডার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালালউদ্দিন এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর সাব্বির মাহমুদ ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন