মোহাম্মদ আলী: ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪৫ শতাংশই রপ্তানি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয় জার্মানীতে, দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইংল্যান্ড। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনারবাহী জাহাজগুলো শ্রীলঙ্কার কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দর হয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে হয়। এতে সময় ও খরচ লাগে বেশি। তবে এবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি ইউরোপে কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস চালু হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইংল্যান্ডের ব্যস্ততম বন্দর লিভারপুল ও নেদারল্যান্ডের রটারডামে পণ্য পরিবহনে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস চালু করছে লন্ডনভিত্তিক ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠান ‘অলসীস গ্লোবাল লজিস্টিকস’। প্রাথমিকভাবে তিনটি জাহাজ দিয়ে এ পণ্য পরিবহন সেবা শুরু হবে; প্রতি দশ দিন পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে লিভারপুলের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছেড়ে যাবে। লিভারপুল থেকে জাহাজটি যাবে ইউরোপের ব্যস্ততম বন্দর নেদারল্যান্ডসের রটারডামে; সময় লাগবে ২০-২২ দিন। এর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম-ইংল্যান্ড এবং চট্টগ্রাম-নেদারল্যান্ড রুটে সরাসরি রপ্তানি পণ্য পরিবহন সেবা শুরু হবে। এর ফলে দেশের রপ্তানিকারকরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।
‘অলসীস গ্লোবাল লজিস্টিকস’ এর দেশীয় শিপিং এজেন্ট ফনিক্স শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) অনুমোদন পেয়েছি। চট্টগ্রাম-লিভারপুল-রটারড্যাম রুটের প্রথম জাহাজটি হচ্ছে ‘এমভি এমো’। বর্তমানে সেটি চীনের বন্দরে আছে। সেখান থেকে প্রায় ৬০০ টিইইউএস খালি কনটেইনার বোঝাই করে জাহাজটি আগামী ১৮ মে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনার বোঝাই করে ১৯ মে যাত্রা শুরু করবে লিভারপুলের উদ্দেশ্যে। এখনো কনটেইনার বুকিং চলছে। ‘এমভি এমো’ যাত্রার পর আনুমানিক ৩০ মে দ্বিতীয় জাহাজ সান আলফনসো ও ৬ জুন তৃতীয় জাহাজ বিবিসি ফিনল্যান্ড ইংল্যান্ডের লিভারপুলের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে।’
সৈয়দ সোহেল হাসনাত বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কলম্বো ও সিঙ্গাপুর হয়ে ইউরোপের বন্দরগুলোতে জাহাজ যেতে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। ভাড়া ও সময় বেশি লাগে। এখন ২২-২৫ দিনে মধ্যে জাহাজ ইউরোপের বন্দরগুলোতে পৌঁছে যাবে, আগে লাগত ৪৫ দিনের চেয়ে বেশি। কলম্বো ও সিঙ্গাপুরের বন্দরে অনেক সময় বাংলাদেশী কোম্পানির কনটেইনারগুলোকে জাহাজ বোঝাইয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয় না। এখন সে সমস্যা হবে না। চট্টগ্রাম-লিভারপুল-রটারড্যাম রুটে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনামও অনেক বৃদ্ধি পাবে।
শিপিং লাইনস ব্যবসায়ী শাহেদ সরোয়ার বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যে সব জাহাজ কলম্বো ও সিঙ্গাপুর হয়ে ইউরোপে যায়, এখন কিছু শিপিং কোম্পানি চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ সরাসরি ইউরোপে নিয়ে যাবে। এ ধরনের কিছু সার্ভিস শুরু হচ্ছে।’
চবকের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘চট্টগ্রাম-লিভারপুল-রটারড্যাম রুটে সরাসরি কনটেইনার জাহাজ সার্ভিস শুরু হবে। একটা শিপিং এজেন্ট আবেদন করেছে। অনুমোদনও পেয়েছি।’
সিএন/এমএ
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন