বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

চট্টগ্রাম সিটির জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

মঙ্গলবার, জানুয়ারী ৪, ২০২২

প্রিন্ট করুন
Untitled design 21 1

চট্টগ্রাম: যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে উন্নত বিশ্বের আদলে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত একনেক (ইসিএনইসি) বৈঠকে এ ব্যাপারে সম্ভাব্য কম সময়ের মধ্যে প্রকল্প তৈরি করে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটিতে দিন দিন যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী নিজেই চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণ ও দ্রুত এর বাস্তবায়নে নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ সচিবকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দায়িত্ব দেয়া হয়। এছাড়া, বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সড়ক উন্নয়নের জন্য আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সার্বিক উন্নয়নে আরো ৫০ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়।

একনেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাসস’কে জানান, ‘শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে অনেক বেশি পছন্দ করেন। তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জলজট নিরসন, স্যুয়ারেজ প্রকল্প, বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারসহ অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নে ইতিপূর্বে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছেন, যার অধিকাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে ও হচ্ছে। চট্টগ্রামবাসী এর মধ্যে এসব প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন।’

হাছান মাহমুদ বলেন, বলেন, ‘বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে সর্বাত্মকভাবে একটি আধুনিক ও উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী সচেষ্ট রয়েছেন। চট্টগ্রামকে বিশ্ব মানের শহরে রূপান্তরে তিনি ইতিমধ্যে সব সেবা সংস্থাকে দিয়ে সুদূরপ্রসারী ও টেকসই অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছেন। এখন আমরা চট্টগ্রামবাসীর দায়িত্ব হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও সদিচ্ছাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানো। মেট্রোরেল ও চসিকের আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামে আর যানজট সমস্যা থাকবে না। ফলে বন্দর নগরী হিসেবে গাড়ির অত্যধিক চাপ নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাপনে আর বাধা হতে পারবে না।’

জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর একনেক সভার কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালুর ব্যাপারে অনুরোধ জানান তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও উপস্থিত ছিলেন। তথ্য মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম শহরের জনসংখ্যা এখন ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নির্বিঘ্নে যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এখনই যদি মেট্রোরেলের উদ্যোগ নেয়া না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। তথ্য মন্ত্রীর প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শহরে মেট্রোরেল সার্ভিস চালুর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন উপস্থিত সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে তাঁর আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।

তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদের প্রস্তাবনা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আগহে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল (এমআরটি) চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (ফিজিবিলিটি স্টাডি) কাজ ২০১৯ সালে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মেট্রোরেলের সাথে জড়িতদের চট্টগ্রামের জন্য অবিলম্বে মেট্রোরেলের ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করতে নির্দেশ দেন।

একনেকের ওই সভায় কয়েকটি সড়কের প্রকল্প পাস হয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংকালে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল (এমআরটি) চালুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছিলেন।

এ দিকে, চসিকের আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প সম্পর্কে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর একান্ত সচিব আবুল হাশেম জানান, ‘এ প্রকল্প চট্টগ্রামের সড়ক ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন ঘটাবে। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দর সড়কের সিমেন্ট ক্রসিং থেকে ডকইয়ার্ড পর্যন্ত রাস্তাকে ৬০ ফুট করে সম্প্রসারণ, ৬০০ মিটার ওভারপাস, ৩৮ টি ফুটওভার ব্রিজ, ২২ টি কালভার্ট, ১৪ টি ব্রিজ, একটি ওভারপাস, দশটি রাউন্ড এবাউট ও ৭৬৯ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ। এ প্রকল্প শেষ হলে চট্টগ্রাম সিটির একটি রাস্তাও আর অনুন্নত থাকবে না। সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী হয়ে ওঠবে চট্টগ্রাম।’

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন