চবি প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের শিক্ষক ক্যাটাগরির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকেরা। পূর্ণ প্যানেল না হলেও বিএনপি ও জামাতপন্থী শিক্ষকেরা দুইটি পদে আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল পুর্ণ প্যানেলে প্রার্থী দিলেও নিজেদেরকে মূল হলুদ দল দাবি করে পূর্ণ প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছে হলুদ দলের আরেক অংশ। হলুদ দলের বিপরীতে বিদ্রোহী এই প্যানেলকে ‘উপাচার্যের প্যানেল’ বলছেন হলুদ দলের নেতারা। এছাড়া হলুদ দলের দুই প্যানেলের বাহিরে আরও কয়েকজন বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। শিক্ষকেরা বলছেন চার বছর পর অনুষ্ঠিত হতর যাওয়া এই নির্বাচনে পাঁচমুখী লড়াই হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ৪ টি পদে ২৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে ১০ জন প্রত্যাহার করেছেন। আগামী ৬ মার্চ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভোটাররা ২৭ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ অগ্রিম ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে হলুদ দল থেকে ৪ টি পদে পূর্ণ প্যানেল মনোনয়ন জমা দেয়া হয়। বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষক সমর্থিত সাদা দল থেকে একটি পদ ও সাদা দল থেকে বেরিয়ে আসা বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ থেকে দুইটি পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়। তবে নিজেদেরকে হলুদ দলের প্যানেল দাবি করে পূর্ণ প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছেন ‘উপাচার্যপন্থী’ শিক্ষকেরা।
বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের অংশগ্রহণ: জাতীয় নির্বাচন বর্জনের ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন বর্জন করলেও সিন্ডিকেট নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি ও জামাতপন্থী শিক্ষকেরা। এর মধ্যে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ ‘সাদা’ দল অধ্যাপক পদে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে সাদা দল থেকে বেরিয়ে আসা বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে প্রার্থী দিয়েছে।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নসরুল কাদির বলেন, সিন্ডিকেট নির্বাচন ক্যাটাগরির নির্বাচন। এখানে শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আছে। তাই আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
অন্যদিকে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বলেন, সাদা দল থেকে অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে একজনকেই প্রার্থী দেয়া হয়েছে। গত ১৪ বছর ধরে যেভাবে নিয়োগ হচ্ছে আমাদের ক্যাটাগরিতে আমাদের প্রার্থী দেয়ার অবস্থা নেই। সাদা দলের সিনিয়র শিক্ষকরা চাচ্ছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, এইজন্যই আমরা নির্বাচন করছি।
নির্বাচনে প্রার্থী যারা:
হলুদ দল থেকে অধ্যাপক পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, সহযোগী অধ্যাপক পদে ফিশারিজ বিভাগের ড. মোহাম্মদ শহিদুল আলম, সহকারী অধ্যাপক পদে বাংলা বিভাগের মোহাম্মদ আলী ও প্রভাষক পদে অর্থনীতি বিভাগের ফাতেমা আক্তার হিরামনি।
হলুদ দলের বিদ্রোহী ‘উপাচার্যপন্থী’ প্যানেলের প্রার্থী যারা: অধ্যাপক পদে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ মামুন, সহযোগী অধ্যাপক পদে অর্থনীতি বিভাগের ড. নঈম উদ্দিন হাছান আওরঙ্গজেব চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক পদে লোক প্রশাসন বিভাগের মুহাম্মদ ইয়াকুব ও প্রভাষক পদে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন।
এছাড়া হলুদ দলের এই দুই প্যানেল ছাড়াও অধ্যাপক পদে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন (স্বতন্ত্র), সহকারী অধ্যাপক পদে অর্থনীতি বিভাগের আ ফ ম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের মোক্তার আহমেদ চৌধুরী ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বিদ্রোহী হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন।
বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের প্রার্থী যারা:
অধ্যাপক পদে সাদা দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির। এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক পদে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের এ.জি.এম নিয়াজ উদ্দিন।
হলুদ দলের বিদ্রোহী ‘উপাচার্যপন্থী’ প্যানেল থেকে অধ্যাপক পদে প্রার্থী ড. আবদুল্লাহ মামুন বলেন, আমরা মূল হলুদ দলের প্রার্থী। হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈধতা নেই। আমরা আগে জানিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের মতোই আমরা সিন্ডিকেট নির্বাচনেও জয়ী হবো বলে আশাবাদী।
সিএন/এমটি
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন