ঢাকা: ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে সড়কপথে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা। আর সেই মন খারাপ করা দুর্ঘটনাগুলোসহ মোট দুর্ঘটনা তিন হাজার ৬৩০। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই হাজার ৯৯২ জন ও নিহত হয়েছেন ৪৯১ জন।
১-৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত নৌপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬টি, এতে আহত হয়েছে ৭৭ জন ও নিহত হয়েছে ১৬ জন; রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬ টি, এতে আহত হয়েছে অর্ধশত, নিহত হয়েছে ১৪ জন; আকাশ পথে কোন দুঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ্য হয়েছেন অর্ধশতের বেশি মানুষ।
বাংলাদেশে সড়ক পথে দূর্ঘটনা না কমার জন্য ঢাকাসহ সারা দেশে গণ পরিবহন সেক্টরে কেবলমাত্র প্রশাসনিক অদক্ষতাই নয়; দায়ী দুর্নীতি-অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার। পাশাপাশি যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন সেই সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া এক শ্রেণির চাঁদবাজ সিন্ডিকেট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবস্থার কারণে যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস, ট্যাক্সিক্যাব ও অটোরিক্সার এ মহাসংকট ও স্বল্পতা। তারা একের পর অপকর্ম করে যাওয়ায় আমাদের পথ দুর্ঘটনামুক্ত হচ্ছে না। সড়কপথ, নৌপথ ও রেলপথের দুর্ঘটনামুক্ত পথচলা আমাদের জনগনের অধিকার। সেই অধিকার রক্ষায় মালিক-শ্রমিক-প্রশাসনিক ও সাধারণ জনগনের সমন্বয়ের কোন বিকল্প নেই বলে সেভ দ্য রোড মনে করে। আর তাই বার বার সাত দফায় ফিরে যাই। পাশাপাশি সেভ দ্য রোডের পক্ষ থেকে গত ১২ বছর ধরে চার পথ দুর্ঘটনামুক্ত করতে সেভ দ্য রোডের সাত দফা দাবি নিয়ে এগিয়ে চলা অব্যহত রয়েছে ছাত্র-যুব-জনতা-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার ঐক্যবদ্ধতায়। আর সেই সাত দফা হল- মিরেরসরাই ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা করতে হবে; ফুটপাত দখলমুক্ত করে যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা দিতে হবে; সড়ক পথে ধর্ষণ-হয়রানি রোধে ফিটনেস বিহীন বাহন নিষিদ্ধ এবং কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া চালক-সহযোগি নিয়োগ ও হেলপার দিয়ে পরিবহন চালানো বন্ধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে; স্থল-নৌ-রেল ও আকাশ পথ দূর্ঘটনায় নিহতদের কমপক্ষে দশ লাখ ও আহতদের তিন লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ সরকারীভাবে দিতে হবে; ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সত্যিকারের সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ‘ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ বাস্তবায়ন করতে হবে; পথ দূর্ঘটনার তদন্ত ও সাজা ত্বরান্বিত করণের মধ্য দিয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে ও ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ ও নৌ পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা-সহমর্মিতা-সচেতনতার পাশাপাশি সব পথের চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সব পরিবহন চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে; ইউলুপ বৃদ্ধি ও পথ-সেতুসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ে দূর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যাতে ভাঙা পথ ও ভাঙা সেতু আর ভাঙা কালভার্টের কারণে আর কোন প্রাণ দিতে না হয়। যেহেতু মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটছে খুব বেশি, চাই মোটর সাইকেলের চালকদের উপর বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। চালকদেরকে সচেতনতার সাথে-সতর্কতার সাথে পথ চলার। আমরা চাই মানুষের জন্য দুর্ঘটনামুক্ত পথ। আর সেই পথ তৈরির জন্য নীতির সাথে পথ চলতে হবে বাংলাদেশের রাজনীতিক-প্রশাসনিক সকল স্তরের ক্ষমতাধরকে।
প্রেস বার্তা/সিএন/এমএ
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন