চট্টগ্রাম: লেখকরা ঘোরের মধ্যে থাকে বলেই শব্দের বিস্ফোরণ হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রাপ্ত কথা সাহিত্যিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। কবি জামিল বিন খলিলের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ও আকাশ তুমি থামো’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্বজিৎ চৌধুরী আরো বলেন, ‘অনেকেই লেখেন, কিন্তু সবার লিখা হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারে না। জামিল বিন খলিলের লেখার পাঠক প্রিয়তার প্রমাণ আজকের এ আয়োজন। জামিলের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিচয় না থাকলেও যখন শুনেছি, সে খেলাঘরের সাথে সম্পৃক্ত, তখন আর আলাদা করে জামিলের পরিচয় খুঁজতে হয়নি। সে খেলাঘরিয়ান, এটাই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়।
শুক্রবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে এ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ক্লিক ম্যাগাজিনের সম্পাদক জালালউদ্দিন সাগরের সঞ্চালনায় এতে অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক হোসাইন কবির, খেলাঘর উত্তর জেলার সভাপতি মো. খোরশেদ, ফ্যাশন ডিজাইনার রওশন আরা চৌধুরী, সাবেক সভাপতি লিলি বড়ুয়া, ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়া, খেলাঘর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক শৈবাল, চম্পাকুঁড়ি খেলাঘর আসরের সভাপতি সফিকুল ইসলাম মিলন, চন্দ্রঘোনা ফোরাম চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন তালুকদার, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান, মিলি চৌধুরী, হাসান জাহাঙ্গীর, দিলরুবা খানম।
জামিল বিন খলিলের কাব্যগ্রন্থের প্রশংসা করে সাংবাদিক মো. খোরশেদ বলেন, ‘জামিল শৈশব থেকেই যেমন ভাল সংগঠক ছিলেন, ঠিক তেমনি ভাল লিখতেনও। দেরিতে হলেও তার লিখা কবিতাগুলো ছাঁপার অক্ষরে প্রকাশ হয়েছে, সে জন্য তাকে অভিনন্দন। সমসাময়িক, সামাজিক অসমতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু-লেখালিখির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টানে জামিলকে। প্রেম বা বিরহের বিষাদ নিয়েও লিখেন তিনি। সহজ যাপিত জীবনের মত সহজ ছন্দ ও বিশেষ করে সহজ শব্দে কবিতা লেখাতেই আগ্রহ রয়েছে জামিলের- কিংবা বলা যায় এটাই তার বৈশিষ্ট্য।’
লিলি বড়ুয়া বলেন, ‘জামিল দক্ষ একজন সংগঠক। দীর্ঘ দিন খেলাঘর উত্তর জেলায় আমরা এক সাথে কাজ করেছি। সে সময়েই তার লেখনির ধার আমাদের চোখে পড়েছে।’
রওশন আরা চৌধুরী বলেন, ‘জামিল বর্তমানে কানাডায় বসবাস করলেও দেশের প্রতি তার যে ভালবাসা ও চিন্তা, সেটাই কবিতার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন। জামিল বন্ধু প্রিয় একজন মানুষ। জামিল ‘ছোটবেলার বন্ধু সবে’ কবিতার মাধ্যমে তার শৈশবের বন্ধুদের স্মরণ করার চেষ্টা করেছে। বন্ধুদের প্রতি ভালবাসার এমন বহিঃপ্রকাশ কয় জনই বা করতে পারে।’
বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের দেশে সবাই কবি। যে যার মত করে লেখেন।’ কিন্তু মানসম্পন্ন কবিতা কতজন লেখকের লেখাতে প্রকাশ পায়? ও আকাশ তুমি থামো কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতাই অসাধারণ। এ কাব্যগন্থের যে কয়টি কবিতা আমি পড়েছি, সব কয়টি আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।’
জালালউদ্দিন সাগর বলেন, ‘জামিল আমাদের শৈশবের বন্ধু। শৈশব থেকেই জামিলের কবিতা আমার আলোড়িত করেছে।
শিল্পী নির্ঝর নৈঃশব্দের আঁকা প্রচ্ছদে ‘ও আকাশ তুমি থামো’ কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করেছেন প্রতিভা প্রকাশ। ১৩৬ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে ৬৩টি কবিতা। গ্রন্থটি পাওয়া যাবে চট্টগ্রামের একুশে বই মেলার ১০৭ নম্বর প্রতিভা প্রকাশের স্টলে। ঢাকায় ৩৮/৩৯/৪০ নম্বর স্টলে (ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী গেইট)।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে জানতে চাইলে জামিল বিন খলিল মুঠোফোনে জানান, ও আকাশ তুমি থামো কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা আবৃত্তি শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে খুব সহজ ভাষা ও শব্দে লেখা হয়েছে। সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি’ কবি জীবনানন্দ দাশের এ কথাটার সাথে আমি শতভাগ সহমত। আমি কবি নই- আমার শব্দগুলো আদৌ কবিতা হয় কিনা সেটা নিয়েও আমার রাজ্যের সংশয়। শখের বশে কালেভদ্রে লেখার চেষ্টা করি। আমার সব সৃজনশীলতার চর্চায় প্রধান প্রেরণা ছোটবেলার ও বড়বেলার বন্ধুরা। মুলতঃ তাদের উৎসাহেই আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ও আকাশ তুমি থামো’।
‘বইটা আমার বন্ধুরা আনন্দের সাথে, আগ্রহের সাথে স্বাগত জানিয়েছে- এটা আমার পরম পাওয়া। কোন এক দিন ভাল একটা কবিতা লিখতে পারব- এ আশাতেই ভবিষ্যতেও আমার কবিতা চর্চা অব্যাহত থাকবে।’
সিএন/এমএ
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন