শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

শিরোনাম

দেশের প্রথম সমন্বিত সরকারি অফিস কমপ্লেক্স হবে চট্টগ্রামে

রবিবার, নভেম্বর ১৪, ২০২১

প্রিন্ট করুন
mini secretariat for chattogram 02 main points of project 1

ইফতেখার ইসলাম:

একপাশ দিয়ে বয়ে চলেছে অপরূপ সৌন্দর্যের কর্ণফুলী নদী। অন্যপাশে এগিয়ে চলেছে মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণকাজ। কর্ণফুলী নদীর তীরে জেগে উঠেছে অপরূপ সৌন্দর্যের হামিদ চর। আর এই চরের ৭৩ একরের অধিক এবং এর আশেপাশের মোট ১০১ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম সমন্বিত সরকারি অফিস কমপ্লেক্স  ‘মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম’। যা কালুরঘাট সেতুর এক কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ঠিক পাশে। 

মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ার আদলে এই প্রকল্পের  অফিস নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রামের ৩৩টি সরকারি অফিস লিখিতভাবে তাদের নিজস্ব ভবন না থাকার কথা জানিয়েছে। 

এছাড়া আরও ১১টি অফিসের নিজস্ব ভবন থাকলেও সেগুলো জরাজীর্ণ বা ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। সব মিলিয়ে পরীর পাহাড়ে থাকা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ৪৪টি সরকারি অফিসকে সেখানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের শেষ দিকে এই প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকে প্রকল্পের নকশা ও ডিপিপিসহ আনুষঙ্গিক সব বিষয় আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে। ইতোধ্যেই ভূ-তাত্ত্বিকসহ সকল ধরনের জরিপ শেষ হয়েছে। নেওয়া হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ শৃঙ্খল রাখার পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা।
সরকারি দপ্তর ছাড়াও সেখানে স্থান পাবে সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, সার্কিট হাউজ, সরকারি ট্রেনিং সেন্টার, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, শপিং মল, মাল্টি স্টোরেড কার পার্কিং, সরকারি স্কুল-কলেজ, নার্সিং ইন্সিটিটিউড, পরিবহন পুল, পেট্রোলপাম্প, স্মৃতিসৌধ, নভোথিয়েটার ও মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা। 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোমিনুর রহমান বলেন, “প্রায় সাড়ে তিনশ অবৈধ স্থাপনার চাপে পরীর পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, পরীর পাহাড়ে থাকা সরকারি অফিসসমূহ সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে করে ঐতিহাসিক পরীর পাহাড়ের সঙ্গে পুরোনো স্থাপনাগুলোও রক্ষা পাবে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, “বর্তমানে প্রায় ৮০ একর ও পরবর্তীতে আরও ৩০ একর মিলিয়ে মোট ১১০ একর জমির ওপর দেশের প্রথম সমন্বিত সরকারি অফিস কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ অনিক বলেন, “প্রতিনিয়ত সরকারের বিভিন্ন ধরনের ডিপার্টমেন্ট বাড়ছে। এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, সে সব ডিপার্টমেন্টের নতুন অফিস করার জন্য সরকারকে আর অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে না।

তিনি বলেন, ” সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি সমস্যা পোহাতে হয় জমি অধিগ্রহণ নিয়ে।সম্পূর্ণ খাস জমিতে হওয়ায় এই প্রকল্পে সেই ঝামেলা নেই।

প্রসঙ্গত, প্রায় এক’শ বছর আগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী বিধৌত পলিতে হামিদ চর নামের ভূখণ্ডটি জেগে ওঠে। পাঁচ বছর আগেও এই খাস জমিতে ধান ও সবজি চাষ করতেন স্থানীয়রা। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের দখলে রয়েছে চরের ৭৩ দশমিক ৪২ একর জমি। 

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন