রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

শিরোনাম

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অনন্তযাত্রার ১৩ বছর

শনিবার, জুলাই ১৯, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে হুমায়ূন আহমেদ একটি অমর নাম। তার সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি আজও জীবন্ত—পাঠকের হৃদয়ে, স্মৃতিতে ও সাহিত্যের পাতায়। সাহিত্যের পাশাপাশি রঙিন পর্দায়ও তিনি রেখে গেছেন অমরত্বের ছাপ। উপহার দিয়েছেন একের পর এক কালজয়ী সৃষ্টি।

আজ ১৯ জুলাই, এই জাদুকরের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার মৃত্যুতে সাহিত্য ও বিনোদন জগতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তা আজও অনুভব করেন অসংখ্য পাঠক, অনুরাগী, সাহিত্যপ্রেমী ও বিনোদনপ্রেমীরা।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ।

তার সাহিত্যজীবন শুরু হয় স্বাধীনতার পরপরই। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়েই তিনি সাহিত্যাঙ্গনে সাড়া ফেলে দেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার লেখা জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘মধ্যাহ্ন’, ‘দেয়াল’, ‘মাতাল হাওয়া’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘গৌরীপুর জংশন’, ‘লীলাবতী’, ‘কবি’ প্রভৃতি।

উপন্যাস ও নাটকে তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো— হিমু, মিসির আলী, শুভ্র— তরুণ প্রজন্মের মনে স্থান করে নিয়েছে স্থায়ীভাবে। সাহিত্যকীর্তির জন্য তিনি পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩) ও হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০)।

সাহিত্যজগত ছাড়াও নাটক ও চলচ্চিত্রে তার সৃষ্টিশীলতার ছাপ স্পষ্ট। আশির দশকে লেখা ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’ তাকে এনে দেয় বিপুল জনপ্রিয়তা। এছাড়া তার কালজয়ী সৃষ্টি ‘বহুব্রীহি’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আজ রবিবার’, ‘কোথাও কেউ নেই’ আজও অমর হয়ে আছে দর্শক হৃদয়ে।

নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্র অঙ্গনেও তিনি রেখে গেছেন অমরত্বের ছাপ। তার নির্মিত ‘আগুনের পরশমণি’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র মতো চলচ্চিত্রগুলো এদেশের সিনেমাঙ্গনে কালজয়ী নির্মাণে হিসেবেই বিবেচিত হয়। এছাড়া তাঁর রচিত অনেক গানও পেয়েছে দর্শক-শ্রোতাদের ভালোবাসা।
চিত্রনাট্যকার, গীতিকার ও চলচ্চিত্রকার হিসেবে খ্যাতিমান হুমায়ূন সাতবার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়েছে। তার জন্মস্থানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভক্ত-অনুরাগীরা স্মরণসভা, পাঠচক্র, প্রদর্শনী ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন