রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

শিরোনাম

নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন

রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। যদিও ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু অংশের মানুষ এখনো পানিবন্দি। পানি নামার সঙ্গে ভেসে উঠেছে ভয়াল ক্ষতচিহ্ন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পটি সেনাবাহিনীকে দিয়ে বাস্তবায়নের কথা ভাবছে সরকার।

এদিকে নোয়াখালীর অধিকাংশ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর, দুর্গাপুর ও লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে পানি বেড়েছে। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার নিুাঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ- ফেনী: স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় প্লাবিত পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার কোথাও কোথাও এখনো পানি রয়েছে। তবে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ৮৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নেন। ইতোমধ্যে ৫ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছে।

কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, বন্যায় এখন পর্যন্ত পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় প্রাণিসম্পদে ৬৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফুলগাজীর পূর্ববসন্তপুর এলাকার বাসিন্দা রিনা সাহা বলেন, ঘর থেকে পানি নামলেও বাড়ির উঠানে হাঁটুসমান পানি রয়েছে। রান্না করার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই।


মঞ্জুনা আক্তার নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, এবার পানি অনেক ধীরগতিতে নামছে। বাঁধের ভাঙন অংশ দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে।

শনিবার ফেনীর পুরাতন মুন্সীর হাটে একটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের সাত হাজার ৩৪০ কোটি টাকার প্রকল্পটি সেনাবাহিনীকে দিয়ে বাস্তবায়ন করার কথা ভাবা হচ্ছে। এ সময় ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানসহ জেলার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালী

শনিবার জেলার সদর, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, এলাকায় পানি নামছে ধীর গতিতে। এজন্য বেশির ভাগ এলাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্যাকবলিত জেলার ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে তেমন বৃষ্টি হয়নি। আপাতত ভারি বৃষ্টিরও সম্ভাবনা নেই। জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, পানি নিষ্কাশনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।

ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর)

উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, অতি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে ৫০ হেক্টর উপশী ও ৫০০ হেক্টর স্থানীয় ধানের বীজতলা এবং ২০০ হেক্টর সবজির জমি বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রেহেনা আক্তার জানান, প্রায় এক হাজার ২৭০ জন মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। ২৯-৩০টি বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন