সুদর্শন পুরুষ মানে কি শুধু সুঠাম দেহ, লম্বা গড়ন ও তীক্ষ্ণ চোয়াল? নাকি এর বাইরেও আছে আরও কিছু সূক্ষ্ম বিষয়, যা একজন পুরুষকে নারীর চোখে আকর্ষণীয় করে তোলে? আধুনিক নারীদের মতে, একজন পুরুষের চেহারা নয়, বরং তার ব্যক্তিত্ব, আচরণ, রুচি এবং আত্মবিশ্বাস—এসব মিলিয়েই তৈরি হয় প্রকৃত “সুদর্শনতা”।
২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা গেছে, সৌন্দর্যের সংজ্ঞা দিন দিন বদলে যাচ্ছে। বিটিএস-এর সদস্য ‘ভি’ বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ নির্বাচিত হলেও অনেকেই এই পছন্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ, এখন নারীরা বাহ্যিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি খোঁজেন একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষের প্রতিচ্ছবি—যার ভেতরে আছে যত্ন, মনন, সংযম ও সংবেদনশীলতা।
নারীদের চোখে একজন পুরুষকে সুদর্শন করে তোলে যেসব গুণ

১. পোশাকে রুচিশীলতা ও সামঞ্জস্য
কোনো পুরুষ যখন নিজের বয়স, পেশা ও পরিবেশ অনুযায়ী পরিপাটি ও উপযুক্ত পোশাক পরেন, তখনই তিনি নারীদের চোখে আলাদা হয়ে ওঠেন। শুধু দামি ব্র্যান্ড নয়, পোশাক পরার ধরন, রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য, জুতা-মোজা ও ঘড়ির মতো ছোটখাটো অ্যাকসেসরিজে রুচির পরিচয়ই নারীদের আকৃষ্ট করে বেশি।
নারীরা ফ্যাশন সেন্স খুব খেয়াল করে, সেটা ফর্মাল হোক বা ক্যাজুয়াল—ছেলেদের পোশাকের আভিজাত্য তাদের ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন ঘটায়।
২. পরিচ্ছন্নতা ও নিজের যত্ন নেওয়ার অভ্যাস

নারীদের মতে, একজন পুরুষ যতই হ্যান্ডসাম হোক, যদি তার ত্বক তেলতেলে, চুল এলোমেলো ও নখ অপরিষ্কার থাকে—তবে তার আকর্ষণ অনেকটাই হারিয়ে যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হাইজিন সচেতনতা নারীদের চোখে একটি আবশ্যিক গুণ।
এছাড়া, মুখের গঠন অনুযায়ী হেয়ারস্টাইল, গন্ধযুক্ত শরীর, এবং চেহারায় আত্মবিশ্বাস—সব মিলিয়ে একজন পুরুষ হয়ে ওঠেন নজরকাড়া।
৩. ব্যক্তিত্ব ও আচরণ

পুরুষের কথাবার্তা, ভদ্রতা, অন্যদের প্রতি সম্মানবোধ, সময়মতো কথা বলা এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব নারীদের চোখে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। নারীরা এমন পুরুষদের পছন্দ করেন, যারা নিজের কথায় স্পষ্টতা রাখেন, অহংকারহীন এবং সকলের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করেন।
নারী শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হন না, বরং যারা তাদের নিরাপত্তা ও সম্মান দিতে পারেন—তারাই নারীর চোখে সত্যিকারের ‘সুদর্শন’।
৪. আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা

আত্মবিশ্বাসী পুরুষ সব সময়ই নারীদের কাছে আকর্ষণীয়। একজন পুরুষ যদি নিজের অবস্থান জানেন, সিদ্ধান্ত নিতে জানেন এবং পরিস্থিতির মধ্যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, তবে তিনি নিজেই আলাদা হয়ে ওঠেন। নারীরা আত্মবিশ্বাসী পুরুষের মধ্যে ভরসা ও নিরাপত্তার ছায়া খুঁজে পান।
৫. লক্ষ্যে অবিচল ও পরিশ্রমী হওয়া
নারীরা সেই পুরুষদের পছন্দ করেন, যারা জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন এবং তা অর্জনে পরিশ্রম করেন। শুধুমাত্র সৌন্দর্য নয়, বরং ক্যারিয়ার, মূল্যবোধ ও স্বপ্নে অবিচল পুরুষরাই নারীদের কাছে দীর্ঘমেয়াদে সুদর্শন হয়ে ওঠেন।
৬. মিশুক ও রসবোধসম্পন্ন হওয়া
সব সময় গম্ভীর নয়, বরং মাঝে মাঝে হালকা রসিকতা, প্রাণোচ্ছল আচরণ এবং বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা নারীদের মনে ছাপ ফেলে। হাস্যরস বোধ একজন পুরুষকে আরও সহজে গ্রহণযোগ্য করে তোলে। অনেক নারী বলেন, “চেহারা বদলে যেতে পারে, কিন্তু কারও স্মার্ট ব্যক্তিত্ব ও কথা বলার ধরন মনে থেকে যায় আজীবন।”
৭. ভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ
একটি মজার ও মনস্তাত্ত্বিক দিক হলো—নারীরা প্রায়ই ভিন্ন দেশীয় বা সংস্কৃতির পুরুষদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হন। এর পেছনে রয়েছে রহস্য, নতুনত্ব, বৈচিত্র্য এবং অচেনাকে জানার আগ্রহ। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, ভিনদেশি পুরুষদের মধ্যে থাকা অনন্য আচরণ, অঙ্গভঙ্গি এবং ভিন্ন মানসিক গড়ন নারীদের কৌতূহল ও টান তৈরি করে।
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন