বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

শিরোনাম

নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নরের উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ৪৫ মিলিয়ন ডলারের পিপিই চুক্তি দুর্নীতি মামলা

বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

বিশেষ প্রতিনিধি: নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ক্যাথি হোকুল এবং অ্যান্ড্রু কুমোর সাবেক উপদেষ্টা লিন্ডা সান ও তার স্বামী ক্রিস হু’র বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ফেডারেল প্রসিকিউটরদের দাবি, করোনাভাইরাস মহামারির সময় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে তারা প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলারের পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) চুক্তি নিজ আত্মীয়দের প্রতিষ্ঠানে পাইয়ে দিয়েছিলেন। এতে তাদের প্রত্যক্ষ লাভ হয়েছিল প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে মামলার শুনানির তারিখ পিছিয়ে ৩ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪১ বছর বয়সী লিন্ডা সান ২০২০ সালে গভর্নর কুমোর প্রশাসনে উপ-বৈচিত্র্য বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে সময় তিনি চীনের বিভিন্ন সরবরাহকারীর মাধ্যমে পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) ও ভেন্টিলেটর সংগ্রহের কাজ করছিলেন। ফেডারেল তদন্তে উঠে এসেছে, চীনের একটি প্রাদেশিক দপ্তর থেকে প্রাপ্ত ইমেইল ইচ্ছেমতো সম্পাদনা করে তিনি নিজের আত্মীয়দের মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম সেখানে জুড়ে দেন।

ফেডারেল আদালতের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘জিয়াংসু চেম্বার অব কমার্স’ এর সুপারিশ উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট দুই প্রতিষ্ঠানের নাম রাজ্য সরকারের কাছে পেশ করেন এবং সেগুলোকেই “স্বর্ণমানের” সরঞ্জাম সরবরাহকারী হিসেবে তুলে ধরেন। এর ফলে রাজ্য সরকার ওই প্রতিষ্ঠান দুটিকে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি দেয়, যার একটি পরিচালনা করতেন সানের স্বামী এবং অপরটি পরিচালনা করতেন তার এক দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই।

সরকারি নথিপত্রে দেখা গেছে, এই চুক্তির মাধ্যমে সান ও তার স্বামী সরাসরি ২.৩ মিলিয়ন ডলার ‘কিকব্যাক’ পান এবং তাদের একটি এক্সেল ফাইলে ৮ মিলিয়ন ডলার লাভের হিসাব পাওয়া গেছে।

ইতিপূর্বে লিন্ডা সানের বিরুদ্ধে বিদেশি সরকারের হয়ে কাজ করার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি চীনের হয়ে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন এবং সে বিনিময়ে উপঢৌকন ও সুবিধা পেতেন।

মার্কিন অ্যাটর্নি জোসেফ নোসেলা বলেন, “যখন মাস্ক, গ্লাভসের তীব্র সংকট চলছিল, তখন তিনি নিজের দায়িত্বের অপব্যবহার করে আত্মীয়স্বজনকে চুক্তি পাইয়ে দেন এবং এর বিনিময়ে বিপুল অর্থ আদায় করেন। করদাতাদের অর্থ আত্মসাৎ করে এমন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”

সান ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে নতুন করে আনা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে: ব্যাংক জালিয়াতি, কর ফাঁকি, বিদেশি এজেন্ট হিসেবে কাজ, ও অভিবাসন আইন লঙ্ঘন।

তবে সানের আইনজীবী জ্যারড শ্যাফার বলেন, “এই মামলায় সরকার বারবার নতুন তত্ত্ব এনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এটা আদালতের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার একটি অপচেষ্টা। মিস সান এই অভিযোগগুলো দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছেন এবং আদালতে লড়াই চালিয়ে যাবেন।”

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন