শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

শিরোনাম

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়

বুধবার, জানুয়ারী ৫, ২০২২

প্রিন্ট করুন
Untitled design 24 1

চলমান ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারিয়ে লংগার টেস্টে নতুন ইতিহাস রচনা করল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সিরিজের প্রথম টেস্টে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে আট উইকেটে হারিয়েছে  বাংলাদেশ। এ জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল মোমিনুলের দল। কেবল তাই নয়, এ প্রথম নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোন ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয় দেখল বাংলাদেশ।

চতুর্থ দিন শেষেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে মুঠোয় ছিল। ডান-হাতি পেসার এবাদত হোসেনের বোলিং তোপে দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেটে ১৪৭ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ১৭ রানে এগিয়েছিলো কিউইরা। এবাদত ৩৯ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন। রস টেইলর ৩৭ ও রাচিন রবীন্দ্র ছয় রানে দিন শেষ করেছিলেন।
ক্রিজে অভিজ্ঞ টেইলর থাকায়, পঞ্চম ও শেষ দিন নিউজিল্যান্ডের স্কোর বড় হবার দারুন সম্ভাবনা ছিল। বাংলাদেশের জয়ের পথে টেইলর যে কাটা হয়ে দাঁড়াবেন, তেমন আশঙ্কাও ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু দিনের শুরুতেই বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত করে দেন দুর্দান্ত বল করা এবাদত। দিনের অষ্টম বলেই টেইলরকে দারুন এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন  এবাদত। ২০১৩ সালের পর বাংলাদেশের কোন পেসার এ প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করলেন। ১১ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এ প্রথম পাঁচ উইকেট নিলেন এবাদত। ১০৪ বল খেলে দুইটি চারে ৪০ রান করেন বিদায়ী টেস্ট সিরিজ খেলতে নামা টেইলর।

টেইলেরর বিদায়ের পর কাইল জেমিসনকেও তুলে নেন এবাদত। আট বল খেলে রানের খাতাই খুলতে পারেননি জেমিসন। এবাদতের তোপে যখন কাঁপছে নিউজিল্যান্ড, তখন বল হাতে প্রতিপক্ষের টেল-এন্ডার গুড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। রবীন্দ্রকে ১৬ ও টিম সাউদিকে শুন্য হাতে আউট করেন তাসকিন। দুইটি চারে ট্রেন্ট বোল্ট দলকে আট রান উপহার দিয়েছিলেন। আর সেখানেই বোল্টকে থামান স্পিনার মিরাজ। এতে ১৬৯ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। তাই ম্যাচ জিততে বাংলাদেশ টার্গেট পায় ৪০ রানের। কারণ প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রানের জবাবে বাংলাদেশ করেছিল ৪৫৮ রান। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ১৩০ রানের লিড পেয়েছিল টাইগাররা।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) ২২ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এবাদত ২১ ওভার বল করে ৪৬ রানে ছয় উইকেট নেন। এটিই তার সেরা বোলিং ফিগার। এর আগে টেস্টে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নিয়েছিলেন এবাদত। তাসকিন ১৪ ওভারে ৩৬ রানে তিন উইকেট নেন। বাকী একটি উইকেট নিয়েছেন স্পিনার মিরাজ।

৪০ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করেন সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ফিল্ডিংয়ে আঙ্গুলে চোট পাওয়ায় এ ইনিংসে ব্যাট হাতে নামতে পারেননি প্রথম ইনিংসের ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় ওভারেই সাদমানকে বিদায় করেন নিউজিল্যান্ডের সাউদি। তিন রান করেন তিনি। এরপর শান্তকে নিয়ে ৩১ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক মোমিনুল। জয়ের পথটা সহজ করতেই সর্তকতার সাথে খেলে ৭৫ বল খরচ করেছেন তারা। সমস্যায় না পড়তেই রান তুলতে তাড়াহুড়া করেননি শান্ত ও মোমিনুল। জয় থেকে ছয় রান দূরে থাকতে থামেন শান্ত। তিনটি চারে ৪১ বলে ১৭ রান তুলেন শান্ত শিকার হন জেমিসনের। তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন মোমিনুল। ১৭তম ওভারে জেমিসনের পঞ্চম ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মুশফিক। তিনটি চারে ৪৪ বলে মোমিনুল অপরাজিত ১৩ ও মুশফিক সাত বলে অপরাজিত পাঁচ রান করেন। দুই ইনিংসে সাত উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের এবাদত। আগামী ৯ জানুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।

সিএন/এমএ

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন