লাইফস্টাইল প্রতিবেদক: আমরা প্রায়ই এখন মেডিটেশন কথাটির সাথে পরিচিত। তবে কি এ মেডিটেশন জানেন কি? অনেকে মেডিটেশন বলতে শুধু প্রার্থনা করাকে বুঝে থাকেন। তবে, সেটি কিন্তু ভুল ধারণা। এক কথায়, মেডিটেশন বলতে আমরা যেটিকে ‘ধ্যান’ বলে থাকি। এ মেডিটেশনের মাধ্যমে আপনার আত্মার শান্তি মেলে। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে ধ্যান শুরু করে দিন। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চাইলে ধ্যান শুরু করে দিন। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে ধ্যান শুরু করে দিন। জীবন উপভোগ করতে চাইলে ধ্যান শুরু করে দিন। সুখী হতে চাইলে ধ্যান শুরু করে দিন। মোটকথা ‘ধ্যান’ এমন একটি বিষয়; যার প্রত্যেক ভাঁজে ভাঁজে শুধুই উপকার আর উপকার।
আমাদের দেশের খুব কম সংখ্যক সচেতন মানুষই আছেন, যারা ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। তবে, তারা ছাড়া যারা এটি থেকে দূরে রয়েছেন, তারা জানেনই না যে, ধ্যান আমাদের জন্য কতটা জরুরী। মেডিটেশন বা ধ্যান মস্তিষ্কের জন্য খুব উপকারী একটি বিষয়। আমাদের মস্তিস্ক সব সময় কাজ করতে থাকে। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখনো কাজ করে। মস্তিষ্ক পুরো শরীরের নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। অর্থাৎ, বিরামহীন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। আমাদের ঘুমানোর সময়, চোখ বন্ধ করে রাখার সময় বা ধ্যান করার সময় মস্তিষ্কের বিশ্রাম হয়। এ বিশ্রামের ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। তখন পুরো শরীরের নিয়ন্ত্রণক্ষমতা হয়ে ওঠে আরো বেশি শক্তিশালী।
ধ্যান বা মেডিটেশনের সময় মানুষ চোখ বন্ধ করে রাখে। ফলে চোখ, কপাল, ঘাড়, মাথা, চোখের চারপাশের স্নায়ু ও মাংসপেশির বিশ্রাম হয়। ধ্যানের সময় মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষেরও বিশ্রাম হয়। তখন মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথাও কমে। মস্তিষ্কের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে যায়। এ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত শিরা–উপশিরার মাধ্যমে পুরো শরীরে সঞ্চালিত হয়। এতে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও পুষ্টি হয়। অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত দেহের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। পরিণামে কমে যায় স্ট্রেস হরমোন বা ডায়াবেটোজেনিক হরমোন।
এছাড়া, হরেক রকম চাপে অনেক মানুষই আছেন, যারা কম বয়সে ডায়াবেটিসে ভোগেন। দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ রক্তে ডায়াবেটোজেনিক হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটোজেনিক হরমোন ডায়াবেটিস তৈরির অন্যতম প্রধান ফ্যাক্টর বা নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে রক্ষার জন্য মানসিক চাপমুক্ত থাকাটা খুবই জরুরি। তখনই করতে পারেন ধ্যান বা মেডিটেশন।
মেডিটেশনের মস্তিষ্কের বিশ্রাম হয়, এতে অক্সিজেনের মাত্রা বেড়ে যায় ও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পুরো শরীরে সঞ্চালিত হয়। এতে চোখের স্নায়ুগুলোর বিশ্রাম হয়। চোখ বন্ধ করে ধ্যান করার সময় চোখের মাংসপেশিরও বিশ্রাম হয়। নিয়মিত ধ্যান করলে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও কমে।
মেডিটেশন মানুষকে তার মন ও চিন্তা-চেতনা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, বাড়িয়ে তোলে আত্মবিশ্বাস। তাই, পরিণত বয়সের সব নারী–পুরুষের জন্য মেডিটেশন খুব জরুরি। আমাদের উচিত, কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিজেদের ধ্যান করা, আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশী পরিচিতদের এতে উৎসাহিত করা।
সিএন/এমএ
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন