শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

পর্যটকদের জন্য খুলছে সেন্ট মার্টিনের দুয়ার, মানতে হবে ১২ নির্দেশনা

শুক্রবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

সিএন প্রতিবেদন: দীর্ঘ নয় মাস বন্ধ থাকার পর আবারও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন। আগামী শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে দ্বীপে যেতে পারবেন পর্যটকেরা, তবে মানতে হবে সরকারের দেওয়া ১২টি নির্দেশনা। পরিবেশ রক্ষা ও নিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিশ্চিত করতে এসব নির্দেশনা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

নির্দেশনাগুলো হলো—

১. বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া সেন্ট মার্টিনে কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না।
২. পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
৩. দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটকসংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
৪. নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ভ্রমণের অনুমতি থাকবে, রাতযাপন করা যাবে না।
৫. ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সীমিত পরিসরে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকবে।
৬. ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
৭. প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
৮. রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ।
৯. কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, এবং কাছিম, রাজকাঁকড়া, প্রবাল, শামুক–ঝিনুকসহ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
১০. সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ কোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।
১১. নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১,০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
১২. প্লাস্টিক বোতলের পরিবর্তে নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, ‘প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও সৌন্দর্য রক্ষায় এবার নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে।’

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম বলেন, ‘ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন টিকিট নিতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে, যা না থাকলে তা অবৈধ বলে গণ্য হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত নয় মাস পর্যটক চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের পুনরুদ্ধার ঘটেছে। সৈকতে শামুক–ঝিনুকের বৃদ্ধি, লাল কাঁকড়ার দৌড়ঝাঁপ ও মা কাছিমের ডিম পাড়ার পরিবেশ ফিরেছে।

পরিবেশবিদদের মতে, সীমিত পর্যটন ও কঠোর নিয়ন্ত্রণ সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় নতুন আশা জাগাচ্ছে।


আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন