ইস্তাম্বুলে বসা আফগানিস্তান-পাকিস্তান সংকটের সমাধান দুই দিনেও আসেনি। উল্টো আফগান সরকার অভিযোগ করছে, সদিচ্ছার অভাব আছে পাকিস্তানের। তারা অনায্য দাবি করছে। তবে তালেবান সরকারকে পাল্টা দুষছে পাকিস্তান। পরমাণু শক্তিধর দেশটির দাবি, তারা যথেষ্ট সংযত থাকার চেষ্টা করছে, তবুও সমাধানে আসতে গড়িমসি করছে আফগানরা।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) কূটনৈতিকের সূত্রের বরাতে একাধিক বিশ্ব মিডিয়া জানায়, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্ততায় চলা আলোচনার টেবিল ছেড়ে উঠে যান পাকিস্তানি প্রতিনিধি দল। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ইসলামাবাদ চায় পাকিস্তান–আফগানিস্তান আলোচনা মৌখিক নয়, বরং লিখিত চুক্তির মাধ্যমে শেষ হোক।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা বলেছে, সমাধান ছাড়া আলোচনা শেষ হওয়ার পরপরই তালেবান সরকার অভিযোগ করে, পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অনেকে আহত হয়েছে। তালেবানের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আলোচনাগুলো সদিচ্ছার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমরা আশা করেছিলাম ইসলামাবাদ বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব দেবে, যাতে একটি মৌলিক সমাধানে পৌঁছানো যায়।’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, আলোচনার সময় পাকিস্তান তাদের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সব দায়িত্ব আফগান সরকারের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছে। অথচ নিজেদের নিরাপত্তা বা আফগানিস্তানের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো দায়িত্ব নিতে তারা আগ্রহ দেখায়নি।
পাকিস্তানের ওপর দায় চাপিয়ে মুজাহিদ বলেন, ‘পাকিস্তান আলোচনায় দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসহযোগিতামূলক আচরণ করেছে, যার ফলে কোনো ফলাফল আসেনি।’
সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং প্রাণহানির ঘটনায় দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জটিল আকার নিচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, পাকিস্তান তার নীতিগত অবস্থানে অটল রয়েছে। আফগান ভূখণ্ড থেকে উদ্ভূত সন্ত্রাস দমনের দায়ভার আফগানিস্তানেরই বহন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের দোহা চুক্তির অধীনে আফগান তালেবান এখনো পর্যন্ত তাদের আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
আতাউল্লাহ জানান, পাকিস্তান-আফগান জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব বজায় রেখেছে এবং তাদের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ কামনা করে। তবে আফগান তালেবান সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপকে সমর্থন করবে না, যা আফগান জনগণ বা প্রতিবেশী দেশের স্বার্থবিরোধী।



চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন