চলছে বছরের তৃতীয় মাস। চট্টগ্রামে এখনও অনেক শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছেনি। কেউ পেয়েছে দু-একটি বই, আবার কেউ পেয়েছে তিনটি। আবার কেউ একটিও পায়নি। ফুল সেট বই না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এনসিটিবি জানিয়েছে, বাঁধাই মেশিনের সংকট ও শ্রমিকদের নোট-গাইড বাঁধাইয়ের কাজে বেশি মনোযোগী হওয়ায় পাঠ্যবই বিতরণে দেরি হচ্ছে। তবে মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, কিছু বইয়ের টেন্ডারে বিলম্ব হওয়ায় ছাপার কাজ এখনও শেষ হয়নি।
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত মাধ্যমিকের বই এসেছে মাত্র ৬০ শতাংশ। আর প্রাথমিকের বই এসেছে ৯৩ শতাংশ। ফুল সেট বই না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে কেউ চড়া দামে পুরাতন বই কিনে কোনমতো পড়াশোনা চালাচ্ছেন। কেউবা পিডিএফ থেকে ফটোকপি করে পড়ছেন। যাদের এই দুইটার সামার্থ্য নাই তাদের পড়াশোনার অবস্থা শোচনীয়। দুই মাসেও বই না আসায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে হাতাশ অভিভাবকরা।
শেখ ফজলুল করিম নামের এক অভিভাবক চলমান নিউইয়র্ককে বলেন, বছরের দুই মাস চলে গেছে। আমার মেয়েকে স্কুল থেকে এনসিটিবি’র কেবল বাংলা ব্যাকরণ বইটি দিয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত পুরাতন বই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। আমি আন্দরকিল্লার দোকানে খুঁজে খুঁজে ২০০ টাকা করে কয়েকটি পুরাতন বই কিনে এনেছি। এগুলো দিয়ে কোনমতে পড়াশোনা চলছে। এরকম হলে আমাদের সন্তানরা তো পড়াশোনায় পিছিয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, এবার চট্টগ্রামে নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ কপি। ইবতেদায়ি, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, মাধ্যমিক ভোকেশনাল, মাধ্যমিক বাংলা ও ইংলিশ ভার্সন মিলে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯৪ জন। এরমধ্যে বুধবার পর্যন্ত বই এসেছে ৯১ লাখ ৮৬ হাজার কপি। ষষ্ঠ শ্রেণির ৬টা উপজেলার বই আসেনি। সপ্তম শ্রেণির চাহিদার অর্ধেক বই এসেছে। অষ্টম শ্রেণির তিনটা বিষয় বিষয়ের বই এসেছে। ৯ম শ্রেণির বিভাগীয় কিছু বই বাদে সব বই এসেছে। দশম শ্রেণির সব বই এসেছে।
অন্যদিকে মাদ্রাসার মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই আসেনি। দাখিল ৮ম শ্রেণির তিনটা বিষয়ের বই এসেছে। বাকি শ্রেণির বই মোটামুটি সব এসেছে।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা বলেন, এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বই এসেছে। আমরা বই আসা মাত্র পাঠিয়ে দিচ্ছি। মাউশি, এনসিটিবিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রাথমিকের ৯৩ শতাংশ বই এসেছে। প্রাথমিকে ৪০ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৬ কপি চাহিদা রয়েছে। বিপরীতে তৃতীয় শ্রেণির ৩১০ টি, চতুর্থ শ্রেণির ৬৯ হাজার ৯৮৬ টি ও পঞ্চম শ্রেণির ১ হাজার ২১০ টি বই ঘাটতি রয়েছে। আর প্রাক-প্রাথমিকে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮২ কপি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে সব বই এসেছে।
সিএন/এমটি
চলমান নিউইয়র্ক ফেসবুক পেজ লাইক দিন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন