শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

শিরোনাম

বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের ছোঁয়া, বদলে যাচ্ছে অবকাঠামোর চেহারা

শুক্রবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৫

প্রিন্ট করুন

ঢাকার আকাশ ছুঁয়ে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নদীর তলায় ছুটছে কর্ণফুলী টানেল—বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এ পরিবর্তনের পেছনে বড় ভূমিকা চীনের। প্রযুক্তি, অর্থায়ন আর অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে দেশটি।

দশ বছর আগেও যেসব প্রকল্প কাগজে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন তার অনেকগুলোই বাস্তবতা। ঢাকায় যানজট নিরসনে কার্যকর হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আর চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর তলদেশে তৈরি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সড়ক টানেল। উভয় প্রকল্পেই ছিল চীনা কারিগরি সহায়তা ও অর্থায়নের ভূমিকা।

শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতুর পাইলিং থেকে শুরু করে বিয়ারিং স্থাপন ও নদীশাসন—সব জায়গাতেই ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত চীনা প্রযুক্তি। ফলে সেতুটি এখন শুধু যোগাযোগের নয়, প্রযুক্তিগত সক্ষমতারও প্রতীক।

অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে। এই সময়ে চীন শুধু বিনিয়োগই করছে না, জ্ঞান ও প্রযুক্তির স্থানান্তর ঘটাচ্ছে—যা দীর্ঘমেয়াদে বড় সম্পদ।’

প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ এম শামসুল হকের মতে, চীনা প্রকল্পে স্থানীয় প্রকৌশলীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ভবিষ্যতের অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।

বর্তমানে চীনের অর্থায়নে চলছে পদ্মা রেল সংযোগ, ঢাকা–আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, রাজশাহী ওয়াসা প্রকল্প, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প। তিস্তা নদীর ব্যবস্থাপনা প্রকল্পেও চীনের ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব আলোচনায় রয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্য বলছে, গত এক দশকেই বাংলাদেশে এসেছে চীনা ঋণের প্রায় ৯৫ শতাংশ। বর্তমানে বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৯ শতাংশই চীনের অংশ।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির স্বল্পসুদ ঋণ কমে যাওয়ার পর চীনের বাজারভিত্তিক ঋণই বাংলাদেশের বড় বিকল্প হয়ে উঠছে। তবে তারা মনে করেন, এই অর্থায়ন টেকসই করতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও গুণগত মান নিশ্চিত করা জরুরি।

বাংলাদেশের অবকাঠামো এখন কেবল উন্নয়নের প্রতীক নয়—এটা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, প্রযুক্তি ও আত্মবিশ্বাসেরও প্রতিচ্ছবি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন